(বাঁ দিকে) তৃণমূল নেতা পিন্টু মণ্ডল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে দেখে গাড়ি থামান রাস্তায় (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
ডুমুরজলা থেকে হেলিকপ্টারে হাবড়া যাবেন বলে সড়কপথে হাওড়া যাচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলনেত্রীকে স্বাগত জানানোর জন্য রাস্তার এক পাশে তৃণমূলের কর্মীরা দাঁড়িয়ে থাকেন। তৃণমূলনেত্রীও গাড়ি থেকে হাত নাড়েন। কিন্তু হাওড়ার ড্রেনেজ ক্যানাল রোড দিয়ে জনা কয়েক তৃণমূল কর্মীকে দেখে গাড়ি থামানোর জন্য চালককে নির্দেশ দিলেন তৃণমূলনেত্রী। তাঁর চোখ একমুখ দাড়ি, চোখে চশমা আর পরনে সাদা ধুতি এক প্রৌঢ়ের দিকে। প্রৌঢ়ের কাঁধে তৃণমূলের দলীয় পতাকা। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ইশারায় ডাকছেন, সেটা বুঝতে কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে। কাঁধে পতাকা নিয়ে এগিয়ে যেতে গাড়ির জানলা দিয়ে খানিক মুখ বার করে মমতার প্রশ্ন, ‘‘কে মারা গেছেন?’’ প্রৌঢ় জবাবে বলেন, ‘মা’। আবার প্রশ্ন, ‘‘বয়স কত হয়েছিল?’’ প্রৌঢ় জবাব দেন ৭৫ বছর। সমবেদনা জানিয়ে চালককে আবার গাড়ি স্টার্ট করতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। মিনিটখানেকের কথাবার্তা। কিন্তু তাতেই আপ্লুত এক দিন আগে মাকে হারানো তৃণমূল নেতা পিন্টু মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘‘কিছুই দিদির চোখ এড়ায় না।’’ মাতৃহারা পিন্টুর পাশে থাকা অন্য এক তৃণমূল কর্মী বলেন, ‘‘এই জন্যই উনি দিদি।’’
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা নাগাদ হাওড়ার ড্রেনেজ় ক্যানেল রোডে মুখ্যমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে কয়েক জন তৃণমূল কর্মী দলীয় পতাকা নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মধ্য হাওড়া তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক পিন্টু। এক দিন আগে মাতৃবিয়োগ হয়েছে তাঁর। হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে ঢোকার মুখেই তাঁকে দেখে গাড়ি থামিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। জিজ্ঞাসা করেন কে মারা গিয়েছেন। পিন্টু বলেন, ‘‘দিদি আমায় সাবধানে থাকতে বলে বেরিয়ে যান। ওঁর এই ব্যবহারে আমি অভিভূত।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমাদের নেত্রী যে সাধারণ কর্মীদের জন্য ভাবেন, তারই প্রমাণ এটা। সত্যিই তিনি মা-মাটি-মানুষের গর্ব।’’