Howrah Hospital

জোড়া সমস্যায় অথৈ জলে হাওড়া হাসপাতালে সিসিবি তৈরির কাজ

গত বছরের অগস্টে কাজ শুরু হওয়ার পরে মাটির নীচে কংক্রিটের স্তম্ভ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেই কাজ বন্ধ করে দেয় রাজ্য পূর্ত দফতর।

Advertisement
দেবাশিস দাশ
শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:১২
আটকে গিয়েছে হাওড়া জেলা হাসপাতালের ১০০ শয্যার ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার ব্লক’ বা সিসিবি তৈরির কাজ।

আটকে গিয়েছে হাওড়া জেলা হাসপাতালের ১০০ শয্যার ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার ব্লক’ বা সিসিবি তৈরির কাজ। —ফাইল চিত্র।

এক দিকে অর্থাভাব, অন্য দিকে প্রকল্পের মধ্যে থাকা একটি ভবন ভাঙার বিষয়ে গড়িমসি— এই জোড়া সমস্যায় আটকে গিয়েছে হাওড়া জেলা হাসপাতালের ১০০ শয্যার ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার ব্লক’ বা সিসিবি তৈরির কাজ। গত বছরের অগস্টে কাজ শুরু হওয়ার পরে মাটির নীচে কংক্রিটের স্তম্ভ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেই কাজ বন্ধ করে দেয় রাজ্য পূর্ত দফতর। কারণ, অর্থ দফতর থেকে টাকা পাওয়া যায়নি। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালের ঠিক মাঝখানে তৈরি হয়েছে মাটির স্তূপ আর নির্মাণ সামগ্রীর পাহাড়। যার ফলে নিত্যদিন সমস্যায় পড়ছেন হাসপাতালে আসা রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা।

Advertisement

কেন্দ্রের সুস্বাস্থ্য প্রকল্পের আওতায় গত বছরের মার্চে রাজ্য সরকার কয়েকটি জেলায় ‘ডিস্ট্রিক্ট ইন্টিগ্রেটেড পাবলিক হেল্‌থ ল্যাবরেটরি’ (ডিআইপিএইচএল) এবং ১০০ শয্যার ২২টি সিসিবি তৈরির জন্য কেন্দ্রের অনুমোদন পায়। যে সমস্ত জেলা হাসপাতালের অধীনে এই সিসিবি হওয়ার কথা, সেগুলির মধ্যে হাওড়া হাসপাতালও রয়েছে। কিন্তু অন্যান্য জেলায় কাজ শুরু হয়ে গেলেও প্রথমে জমি-জটে আটকে যায় হাওড়ার এই দু’টি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, কেন্দ্রের টাকা ফেরত চলে যাওয়ার উপক্রম হয়। শেষে রাজ্য সরকার নড়েচড়ে বসে প্রকল্পটি হাওড়া জেলা হাসপাতালের মেন বিল্ডিংয়ের সামনে করার বিষয়ে অনুমোদন দেয়। অনুমোদন পাওয়ার পরে গত অগস্টে কাজ শুরু করে রাজ্য পূর্ত দফতর। প্রথমেই প্রকল্পের জমিতে থাকা হাসপাতালের রান্নাঘর এবং কর্মী আবাসন ভেঙে ফেলা হয়। পুরো জায়গাটি কার্যত ফাঁকা করে ফেলা হয়। শুরু হয় মাটির নীচে কংক্রিটের স্তম্ভ তৈরির পর্ব। কিন্তু তার পরেই বন্ধ হয়ে যায় সমস্ত কাজ।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত অগস্টে প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও ওই জায়গায় থাকা একটি দোতলা ভবন (যার মধ্যে গোটা হাসপাতালের অক্সিজেন ইউনিট ও ডায়ালিসিস ইউনিট রয়েছে) ভাঙা হয়নি। যার ফলে প্রকল্পের কাজ থমকে গিয়েছে। সেই সঙ্গে ১১৩ কোটি টাকার প্রকল্প হলেও সরকারের তরফে অর্থ মিলেছে নামমাত্র। যার ফলে কাজ এগোনো যাচ্ছে না। হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা
বলেন, ‘‘এই প্রকল্পের জন্য টাকা এসেছে প্রয়োজনের তুলনায় কম। অন্য দিকে, প্রকল্পের জমিতে যে ভবনটি রয়েছে, সেখান থেকে হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ দু’টি ইউনিট অন্যত্র সরাতে একটু সময় লাগছে। তাই কাজ বন্ধ রয়েছে।’’

হাওড়া জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন ভবনের পাশে আর একটি যে ভবন সদ্য তৈরি হয়েছে, সেখানেই হাসপাতালের রান্নাঘর ও ডায়ালিসিস ইউনিট সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, অক্সিজেন ইউনিটের জন্য হাসপাতালের
মর্গের পাশে একটি ভবন তৈরি করা হয়েছে। হাসপাতালের কর্তাদের বক্তব্য, এই দু’টি ইউনিট রাতারাতি সরানো যাবে না। তাই খানিকটা সময় লাগছে। কিন্তু এই দু’টি ইউনিট না সরিয়ে সিসিবি প্রকল্পের কাজ শুরু করা হল কেন? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য তাঁরা দিতে পারেননি।

Advertisement
আরও পড়ুন