TET Scam

প্রাথমিকে চাকরি পিছু পাঁচ লক্ষ টাকা! মোট দশ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন অয়ন, অভিযোগ শান্তনুর বলাগড়ে

ইনছুড়া বাজার এলাকায় বাড়ি বাসুদেবের। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী। রয়েছে কিছু জমিজমাও। বাসুদেবের দাবি, শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায় ওরফে ‘গুরুদা’ এবং তরুণ সেনের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল অয়নের।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
বলাগড় শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৩ ১২:২১
Ayan Shil has taken 10 lakh for jobs, One villager of Balagarh alleges

অয়ন শীল টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ বাসুদেব ঘোষের। — নিজস্ব চিত্র।

প্রাথমিকে চাকরি পিছু ‘দর’ ঠিক হয়েছিল ৫ লক্ষ টাকা। ছেলে এবং মেয়ের চাকরির জন্য ন’বছর আগে তিনি বর্তমানে নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডির হাতে ধৃত অয়ন শীলকে দিয়েছিলেন মোট ১০ লাখ টাকা। কিন্তু চাকরি তো দূর অস্ত, ফেরত পাননি এক কানাকড়িও। অয়নের গ্রেফতারের পর এমনটাই অভিযোগ করছেন হুগলির বলাগড়ের ইনছুড়ার বাসিন্দা বাসুদেব ঘোষ। পঞ্চাশোর্ধ্ব ওই প্রৌঢ়ের দাবি, স্থানীয় দুই তৃণমূল নেতার মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল অয়নের। অবশ্য ওই দুই তৃণমূল নেতার মৃত্যু হয়েছে। অয়ন এখন ইডি হেফাজতে। ফলে সম্ভব হয়নি বাসুদেবের অভিযোগ নিয়ে অয়নের বক্তব্য জানা।

ইনছুড়া বাজার এলাকায় বাড়ি বাসুদেবের। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। রয়েছে কিছু জমিজমাও। বাসুদেবের দাবি, শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায় ওরফে ‘গুরুদা’ এবং তরুণ সেনের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল অয়নের। বাসুদেবের কথায়, ‘‘তরুণ সেনের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। আমি ওঁকে আমার ছেলেমেয়ের চাকরির জন্য বলেছিলাম। উনি আমাকে শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়ের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন।’’ তাঁর অভিযোগ, ছেলে এবং মেয়ের চাকরির জন্য প্রাথমিক ভাবে তিনি দিয়েছিলেন ২ লাখ টাকা। এই সূত্রেই তাঁর দাবি, ‘‘২০১৪ সালের শেষ দিকে আমাকে বলা হয়েছিল আরও ৮ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তা হলে ছেলে ও মেয়ে চাকরি পেয়ে যাবে। সেই মতো আমরা অয়ন শীলকে মোট ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। আমার ছেলে ও মেয়ে ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষা দিয়েছিল।’’

Advertisement

বাসুদেবের কথায়, ‘‘আমাদের বিকাশ ভবনে নিয়ে দিয়ে সাদা খাতায় সই করিয়ে ইন্টারভিউ নিয়েছিল। তাতেও কিছু হয়নি।’’ এর পর টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য ব্যগ্র হয়ে ওঠেন বাসুদেব। প্রথমে চুঁচুড়ায় থাকতেন অয়ন। কিন্তু পরে সেই ঠিকানা বদলান তিনি। বাসুদেবের বক্তব্য, ‘‘চুঁচুড়ার ফ্ল্যাট ছেড়ে সল্টলেকে থাকতেন অয়ন। আমরা সেখানেও গিয়েছিলাম। কিন্তু ওখানে আমাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি।’’ তাঁর দাবি, টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে অয়নের সঙ্গে মারপিটও হয়েছিল তাঁর।

বাসুদেব যে শ্রীকুমারের নাম করেছেন, তিনি ছিলেন হুগলির দেবানন্দপুরের বাসিন্দা। ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর শ্রীকুমার এবং তাঁর ছেলে রূপকুমারের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটে। পাওয়া যায় ‘সুইসাইড নোট’ও। আবার বাসুদেব উল্লিখিত তরুণ ছিলেন বলাগড় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য। সম্প্রতি পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তাঁরও। এই তরুণের হাত ধরেই এক সময় রাজনীতিতে পা রেখেছিলেন নিয়োগ দুর্নীতিতে বর্তমানে ইডি হেফাজতে থাকা বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। অয়নের চুঁচুড়ার ফ্ল্যাটে সেই শান্তনু এবং নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত তথা বলাগড়েরই আর এক বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের ঘন ঘন যাতায়াত ছিল বলেও দাবি করেছেন বাসুদেব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement