Abnormal Behavior of Madhyamik Candidate

চিকিৎসায় সাড়া, শিকলমুক্ত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী

বরাবরই হাসিখুশি ছিল ওই কিশোর। পরিজনরা জানান, তার মেজাজ বিগড়ে যেতে শুরু করে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে। ঠান্ডা ছেলে হঠাৎই হয়ে যায় অস্থির।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
হুগলি শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২৪ ০৯:২৬
এ ভাবেই শিকল দিয়ে বাঁধা থাকত কিশোর।

এ ভাবেই শিকল দিয়ে বাঁধা থাকত কিশোর। নিজস্ব চিত্র।

Advertisement

হঠাৎ করেই কেমন যেন বদলে যাচ্ছিল ১৬ বছরের ছেলেটা! জিনিসপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি সামনে কাউকে দেখলেই তেড়ে যাচ্ছিল সে। হুগলির মাধ্যামিক পরীক্ষার্থী ওই কিশোরকে নিয়ে যেন অকূল পাথারে পড়েছিলেন বাবা! ছেলেকে শিকলে বেঁধেও রেখেছিলেন। অবশেষে প্রশাসনের সহায়তায় চিকিৎসা শুরু হয়েছে ওই কিশোরের।

চিকিৎসক জানিয়েছেন, ‘বাইপোলার সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত ওই ছাত্র। দীর্ঘদিন ধরে, কিছু অভ্যাসগত কারণ, যেমন, বারবার হাত কিংবা পা ধোয়া, কোনও বাঁকা জিনিসকে সোজা করতেই হবে, এমন মনোভাব থাকা ব্যক্তিরা এমন মানসিক রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। ওই ছাত্রেরও এমন অভ্যাস রয়েছে। রোগটি নিরাময়যোগ্য। তবে, বেশ কিছুটা সময় চিকিৎসায় থাকতে হবে।

বরাবরই হাসিখুশি ছিল ওই কিশোর। পরিজনরা জানান, তার মেজাজ বিগড়ে যেতে শুরু করে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে। ঠান্ডা ছেলে হঠাৎই হয়ে যায় অস্থির। শুরু হয় বাড়ির সকলকে মারধর। জিনিসপত্র ভাঙচুরও। পড়শিদের অনেকে বলতে শুরু করেন, ওই কিশোরকে ভূতে ধরেছে। ওই কিশোরকে ওঝা-গুনিনের কাছে নিয়ে যান পরিজনরা। তাতে ফল হয় উল্টো। গত ১১ জুন ওই কিশোরকে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে জানানো হয়, ওই কিশোর সুস্থ। পরের দিনই তাকে ছুটি
দেওয়া হয়।

কিন্তু হতদরিদ্র বাবা ছেলেকে কোথায়, কী ভাবে নিয়ে যাবেন, তা বুঝতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘‘আট-দশজন মিলে ছেলেকে ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। কারও যাতে ক্ষতি না করতে পারে, তাই বাধ্য হয়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিলাম।’’

বিষয়টি জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে এলাকায়। স্থানীয় পুর-প্রতিনিধির থেকে খবর নেন মহকুমাশাসক (সদর) স্মিতা সান্যাল শুক্লা। এরপরেই ওই ছাত্রকে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। মহকুমাশাসক জানান, তিনি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে ফোনে কথা বলে জানতে পেরেছেন, রোগটি নিরাময়যোগ্য। তবে, বেশ কিছুটা সময় চিকিৎসায় থাকতে হবে। এমনকি ওই পরিবারকে চিকিৎসার জন্য সব রকম সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement