Cricket Umpire from Chandannagar

আইপিএলে আজ চন্দননগরের জোড়া প্রতিনিধি

দিল্লি খেলবে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে। দিল্লির হয়ে মাঠে থাকবেন অভিষেক পোড়েল। আর আম্পায়ার হিসাবে অভিজিৎ। অর্থাৎ, চন্দননগরের জোড়া প্রতিনিধি আজ আইপিএলের ময়দানে।

Advertisement
প্রকাশ পাল
শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৫ ০৯:০৮
খেলাচ্ছেন অভিজিৎ।

খেলাচ্ছেন অভিজিৎ। নিজস্ব চিত্র।

ক্রিকেট বিশ্বের চোখ এখন আইপিএলে। আর তাঁর তীক্ষ্ম নজর ২২ গজে।

Advertisement

আইপিএলে আম্পায়ারিংয়ের দায়িত্ব পালন করছেন চন্দননগরের অভিজিৎ ভট্টাচার্য। ইতিমধ্যেই দু’টি ম্যাচ খেলিয়েছেন। একটি গত সোমবার দিল্লি বনাম লখনউ। অন্যটি বৃহস্পতিবার হায়দরাবাদ বনাম লখনউ। গ্ল্যামারে পরিপূর্ণ প্রতিযোগিতার মাঠে ঘরের ছেলেকে দেখে উচ্ছ্বসিত গঙ্গাপারের শহর।

আজ দিল্লি খেলবে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে। দিল্লির হয়ে মাঠে থাকবেন অভিষেক পোড়েল। আর আম্পায়ার হিসাবে অভিজিৎ। অর্থাৎ, চন্দননগরের জোড়া প্রতিনিধি আজ আইপিএলের ময়দানে।

একান্ন বছরের অভিজিতের বাড়ি আদতে ভদ্রেশ্বরের বাবুর বাজার কালীতলায়। এখন স্ত্রী শর্মিষ্ঠা এবং ছেলে অর্ঘ্যদীপকে নিয়ে চন্দননগরের চারমন্দিরতলায় থাকেন। বাবা অপূর্ব ভট্টাচার্য এবং ভাই অংশুমান ভদ্রেশ্বরের বাড়িতে থাকেন। মা মাধবী ভট্টাচার্য মারা গিয়েছেন।

শনিবার সন্ধ্যায় ভাইজাগ থেকে ফোনে অভিজিৎ জানান, তাঁর ক্রিকেটে আসা কিছুটা বড় বয়সেই। মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে, ১৯৯০ সাল নাগাদ। ডানহাতি ব্যাটার ছিলেন। অফস্পিন বোলিং করতেন। শুরু চন্দননগরের দেশবন্ধু স্পোর্টিং ক্লাবে। তার পরে এক বছর ওরিয়েন্টাল স্পোর্টিং। সেখান থেকে ন্যাশনাল স্পোর্টিং। কলকাতা ময়দানে প্রথম ডিভিশনে ইয়ং বেঙ্গল, বিএনআর, এরিয়ান, কালীঘাট, দক্ষিণ কলকাতা সংসদে খেলেছেন। কয়েক বছর ইংল্যান্ডে ক্লাব ক্রিকেটও খেলেছেন। স্বপ্ন ছিল রঞ্জি খেলার। পূরণ হয়নি।

পরে কোচিং শুরু করলেও খাপ খাওয়াতে পারেননি। মাঠে বিসিসিআই আম্পায়ারদের কদর তাঁকে আকর্ষিত করত। আন্তর্জাতিক স্তরের আম্পায়ার শেখর চৌধুরী, অলোক ভট্টাচার্য, অনিরুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুকান্ত পাঠক, সুশান্ত পাঠকদের দেখে আম্পায়ারিংয়ের ইচ্ছে জাগত। ২০০৭ সালে আম্পায়ারিংয়ের পরীক্ষায় পাশ করেন। কয়েক বছর পরে বিসিসিআইয়ের আম্পায়ারিং পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ হন। সেই সময় ফ্রান্সিস গোমসের কাছে পাঠ নেন। ক্রমে আম্পায়ারিংই ধ্যান-জ্ঞান হয়ে ওঠে। এখন তাঁর ঝুলিতে রঞ্জি, মুস্তাক আলি, দলীপ, বিজয় হাজারে ট্রফির মতো প্রতিযোগিতায় আম্পায়ারিংয়ের অভিজ্ঞতা। ঘরোয়া ক্রিকেটে বিভিন্ন বড় ম্যাচ খেলিয়েছেন।

আইপিএলে সুযোগ মেলে ২০২৩ সালে। সে বার চতুর্থ আম্পায়ার। গত বছর মহিলা প্রিমিয়ার লিগ (ডব্লিউপিএল) খেলান। ওই প্রতিযোগিতার ফাইনালেও আম্পায়ার ছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘খেলোয়াড় হিসাবে যে স্বপ্ন পূরণ হয়নি, তার অনেকটাই হচ্ছে আম্পায়ারিংয়ে। এ জন্য আমি সিএবি’র প্রতিও কৃতজ্ঞ।’’ কেন্দ্রীয় জিএসটি বোর্ডে সুপারিন্টেন্ডেন্ট পদে কর্মরত অভিজিৎ।

ক্রিকেটার সতীর্থ অশেষ দে আইপিএলে অভিজিতের আম্পায়ারিং নিয়ে আনন্দিত। একই অভিব্যক্তি সিএবি’র ম্যাচ পর্যবেক্ষক মানকুণ্ডুর বাসিন্দা অভীক খানেরও। ভদ্রেশ্বরের বাসিন্দা, স্কুলশিক্ষক শক্তিপদ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এখানকার কেউ আইপিএলের মঞ্চে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছেন, খুবই খুশির বিষয়।’’

চন্দননগর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বামাপদ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘আমাদের শহরের অভিষেক পোড়েল দিল্লির হয়ে খেলছে। প্রথম দু’টো ম্যাচে রান না পেলেও ও সফল হবেই। ঈশান পোড়েল পায়ে চোট সারিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। আর আভিজিৎ ভট্টাচার্যও আমাদের গর্বিত করছেন।’’

Advertisement
আরও পড়ুন