Jyotipriya Mallick

বনমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো হল বালুকে, জেলে যাওয়ার সাড়ে তিন মাস পর দফতরবিহীন জ্যোতিপ্রিয়

গত সপ্তাহেই আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, জ্যোতিপ্রিয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:২৭
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যের বনমন্ত্রী এবং শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রীর পদ থেকে সরানো হল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। শুক্রবার রাজভবনের তরফে এই খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। রাজভবনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জ্যোতিপ্রিয়ের বদলে বিরবাহা হাঁসদা এবং পার্থ ভৌমিক ওই দুই দফতর সামলাবেন।

Advertisement

গত সপ্তাহেই আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, জ্যোতিপ্রিয় ওরফে বালুর ভবিষ্যৎ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর আলোচনা চলছে। খুব দ্রুতই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অভিষেক।

তবে শুক্রবারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে সামান্য বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। তৃণমূলের একাংশের মতে, বালুকে পুরোপুরি মন্ত্রিসভা থেকেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার অন্য অংশের মতে, তাঁর হাত থেকে দু’টি দফতর কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি এখন দফতর বিহীন মন্ত্রী। এই সূত্রেই প্রশ্ন উঠছে, দফতর কেড়ে নিয়ে কি জ্যোতিপ্রিয়কে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রাথমিক পদক্ষেপ করা হল? আগামী দিনে তা বোঝা যাবে।

এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পাঁচ দিনের মাথায় তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। পরে দলের সমস্ত পদ থেকেও অনির্দিষ্ট কালের জন্য সাসপেন্ড করা হয় তাঁকে। রেশন দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত রাজ্যের তৎকালীন বন মন্ত্রী এবং প্রাক্তন খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়কে গত ২৬ অক্টোবর গ্রেফতার করেছিল ইডি। তার সাড়ে তিন মাস পর দফতর খোয়ালেন জ্যোতিপ্রিয়।

শুক্রবার রাজভবনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সংবিধানের ১৬৬ (৩ ) অনুচ্ছেদ মেনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জ্যোতিপ্রিয়কে রাজ্যের বন দফতর এবং শিল্পোদ্যোগ ও শিল্প পুনর্গঠনের দফতরের দায়িত্ব থেকে ‘অব্যাহতি’ দিচ্ছেন। আপাতত বন দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী থাকছেন বিরবাহা। বালু গ্রেফতার হওয়ার পরেই বীরবাহাকে এই দায়িত্ব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। স্বনির্ভর এবং স্বনিযুক্তি দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রীও থাকছেন বিরবাহা। পার্থ ভৌমিকের হাতে থাকছে সেচ ও জলপরিবহণ দফতর। জ্যোতিপ্রিয়ের হাতে থাকা শিল্পোদ্যোগ এবং শিল্প পুনর্গঠন দফতরও তাঁর হাতে এল।

রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার জ্যোতিপ্রিয়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি। তদন্তকারী এই কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, কয়েকশো রেশন দুর্নীতির অঙ্ক কয়েকশো কোটি টাকার। তবে এই দুর্নীতির জন্য শেষ পর্যন্ত বালু তাঁর মন্ত্রিত্ব খোয়ালেন না কি দফতর বিহীন মন্ত্রী হয়ে থেকে গেলেন, তা আপাতত ধোঁয়াশায়। উল্লেখ্য, এর আগে সাধন পান্ডে আমৃত্যু দফতরবিহীন মন্ত্রী হয়েছিলেন মমতার মন্ত্রিসভায়।

আরও পড়ুন
Advertisement