West Bengal Panchayat Election 2023

সোমবার সন্ধ্যায় অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে পারেন রাজ্যপাল, রাজ্যের ভোট ‘সন্ত্রাস’ নিয়ে কথা?

শনিবার পঞ্চায়েত ভোটের দিন সকাল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ভোট পরিস্থিতি দেখেছেন রাজ্যপাল। এ বার সেই পরিস্থিতি নিয়ে কি শাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ? দেখা করতে পারেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৩ ১৪:০২
image of amit shah and governor

সোমবার সন্ধ্যায় অমিত শাহ (বাঁ দিকে)-এর সঙ্গে দেখা করতে পারেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে পারেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সূত্রের খবর, শনিবার রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে যে ‘সন্ত্রাস’-এর অভিযোগ উঠেছে, সেই বিষয়ে কথা বলতে পারেন রাজ্যপাল। দেখা করতে পারেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গেও বলে খবর।

শনিবার পঞ্চায়েত ভোটে সকাল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছেন রাজ্যপাল। সরেজমিনে দেখেছেন ভোট পরিস্থিতি। তার পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই রবিবার সন্ধ্যায় দিল্লি গিয়েছেন তিনি। যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে রাজ্যপাল বলেছিলেন, ‘‘আমি তাজা বাতাস নিতে যাচ্ছি!’’ তার পরেই প্রশ্ন উঠেছে, কেন রাজ্যপালকে ‘তাজা’ বাতাস নিতে দিল্লি যেতে হচ্ছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন রাজ্যপাল। তাঁকে রাজ্যের ‘নির্বাচনী হিংসা’র বিষয়ে জানাতে পারেন। সোমবার সন্ধ্যায় সম্ভবত সেই কাজটাই করতে চলেছেন তিনি। রাজ্যপালের দিল্লি যাওয়া নিয়ে সোমবার নন্দীগ্রামে প্রশ্ন করা হয় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। তিনি বলেন, “মানুষ ফল দেখতে চায়।’’ সোমবারের সাক্ষাতের পর কি দেখে যেতে পারে সেই ‘ফল’? উঠছে প্রশ্ন।

Advertisement

শনিবার পঞ্চায়েত ভোটের সকাল থেকেই একের পর এক বুথ পরিদর্শন করেছেন রাজ্যপাল। খতিয়ে দেখেছেন ভোট পরিস্থিতি। শুনেছেন ভোটারদের অভিযোগ। ভোটকর্মী এবং রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের কথাও শুনেছে। নদিয়ার পথে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে বিরোধীদের নালিশও শুনেছেন। ভোট শেষ হওয়ার পর রাজ্যপাল যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন, তখন তাঁর কাছে পঞ্চায়েত হিংসা প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘ভোট বুলেটে নয়, ব্যালটে হওয়া উচিত।’’ এ ব্যাপারে তিনি কি কোনও পদক্ষেপ করতে চান? সে প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যপাল বলেছিলেন, ‘‘একজন রাজ্যপালের যা করণীয়, তা-ই করব।’’ মনে করা হচ্ছে, এ বার নিজের ‘করণীয়’ সেই কাজই করতে চলেছেন তিনি। পঞ্চায়েত ভোটের দিন রাজ্যে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। এ পর্যন্ত ভোটের বলি ৪১।

এর আগেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের বিভিন্ন পর্যায়ে হিংসার জন্য নির্বাচন কমিশনকে প্রকাশ্যে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁর নিয়োগ করা নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহের ‘উদাসীনতা’র সমালোচনা করে রাজ্যপাল বোস এ কথাও বলেছিলেন যে রাজীব বাংলার মানুষকে হতাশ করেছেন। ম্যাকবেথের সংলাপ টেনে এনে রাজ্যপাল বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশনারের হাতে এত রক্ত লেগে রয়েছে যে পবিত্র গঙ্গা জলে ধুলেও সেই রক্তের দাগ মুছবে না।

ভোটঘোষণার পর থেকেই রাজ্যপাল এবং নির্বাচন কমিশনের সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছিল। ভোটঘোষণার পর থেকে বাংলায় যে সন্ত্রাসের ছবি দেখা গিয়েছিল, তা নিয়ে বার বার অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এমনকি, তিনি নিজে একাধিক বার সমস্যাদীর্ণ এলাকাগুলিতে ছুটে গিয়েছেন জেলায় জেলায়। রাজভবনে খুলেছেন ‘পিসরুম’।

যদিও রাজ্যপালের এই বক্তব্যের পাল্টা আবার বাংলার শাসকদল তৃণমূল বলেছিল, রাজ্যপাল আদতে এই সব করছেন কেন্দ্রের আদেশে। এবং রাজনৈতিক ফয়দা তোলার জন্য। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘দিল্লি থেকে যে ভাবে আদেশ আসছে, রাজ্যপাল তাঁর সীমিত ক্ষমতা ও এক্তিয়ার অনুযায়ী, তা পালন করার চেষ্টা করছেন।’’ অভিষেকের যুক্তি ছিল, তা না হলে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার সময় রাজ্যপাল রাজভবনে পিস রুম খোলেনননি কেন? তাতে কোনও রাজনৈতিক সুবিধা পাওয়া যাবে না বলে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement