Rogi Kalyan Samities

রোগী কল্যাণ সমিতিতে বড় রদবদল! বাদ সুদীপ্ত, শান্তনু, নির্মলেরা, নতুন নাম-সহ তালিকা প্রকাশ স্বাস্থ্যভবনের

সোমবার রাজ্যের ২৪টি মেডিক্যাল কলেজে রোগী কল্যাণ সমিতিতে সরকারি প্রতিনিধিদের নাম ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য দফতর। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে তালিকায় আছেন মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:২৩
(বাঁ দিক থেকে) সুদীপ্ত রায়, শান্তনু সেন এবং নির্মল মাজি।

(বাঁ দিক থেকে) সুদীপ্ত রায়, শান্তনু সেন এবং নির্মল মাজি। —ফাইল চিত্র।

আরজি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নতুন করে রাজ্যের ২৪টি মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির সরকারি প্রতিনিধিদের নাম ঘোষণা করল স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য ভবন থেকে জারি করা বিবৃতিতে যে তালিকা দেওয়া হয়েছে, তাতে দেখা গেল আরজি করে রোগী কল্যাণ সমিতির সরকারি প্রতিনিধি হয়েছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ। উল্লেখযোগ্য ভাবে কোনও মেডিক্যাল কলেজেই সরকারি প্রতিনিধি হিসাবে নাম নেই শান্তনু সেন, সুদীপ্ত রায় এবং নির্মল মাজির।

Advertisement

আরজি করের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ছিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ্ত। আরজি করের মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর সুদীপ্তকে সরিয়ে দিয়ে আনা হয়েছিল শান্তনুকে। অন্য দিকে, বিভিন্ন বিতর্কের মুখে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় উলুবেড়িয়া উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক নির্মলকে। এ বার তাঁরা কেউই নেই রোগী কল্যাণ সমিতিতে।

আরজি করের ঘটনা নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যের সব হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে দেওয়া হবে। নতুন করে ওই সমিতি গঠন করা হবে। মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকবেন শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের অধ্যক্ষ। অর্থাৎ, কোনও রাজনৈতিক নেতাকে আর রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে দেখা যাবে না। তবে এক জন করে সরকারি প্রতিনিধি সদস্য হিসাবে থাকবেন ওই সমিতিতে। সেই তালিকাই ঘোষিত হল সোমবার।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

এসএসকেএমে সরকারি প্রতিনিধি করা হয়েছে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে। এনআরএসে সরকারি প্রতিনিধি হিসাবে থাকছেন মানিকতলার বিধায়ক সুপ্তি পাণ্ডে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে শশী পাঁজা, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে জাভেদ খান, সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে মদন মিত্রকে করা হয়েছে রোগী কল্যাণ সমিতির সরকারি প্রতিনিধি। এ ছাড়া মালদহ মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতিতে সরকারি প্রতিনিধি হয়েছেন কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীকে, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে খোকন দাস, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে গৌতম দেব, বাঁকুড়া সম্নিলনী মেডিক্যাল কলেজে অরূপ চক্রবর্তী, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে অপূর্ব সরকার, রায়গঞ্জ সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে কৃষ্ণ কল্যাণী, রামপুরহাট সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, কোচবিহার সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে অভিজিৎ দে ভৌমিক, আরামবাগের প্রফুল্লচন্দ্র সেন সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ও হাসপাতালে মিতালি বাগ।

পুরুলিয়া সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে সরকারি প্রতিনিধি করা হয়েছে শান্তিরাম মাহাতোকে। তাম্রলিপ্ত সরকারি মেডিক্যাল কলেজে সৌমেন মহাপাত্র, বারাসত সরকারি মেডিক্যাল কলেজে কাকলি ঘোষ দস্তিদার, ঝাড়গ্রাম সরকারি মেডিক্যাল কলেজে দুলাল মুর্মু, উলুবেড়িয়ার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পুলক রায়, জলপাইগুড়ি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে মহুয়া গোপ, চিত্তরঞ্জন সেবাসদনে সুব্রত বক্সী এবং বিসি রায় মেমোরিয়াল হাসপাতালে স্বপন সমাদ্দারকে করা হয়েছে রোগী কল্যাণ সমিতির সরকারি সদস্য।

এত দিন রোগী কল্যাণ সমিতিগুলির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে জনপ্রতিনিধিরাই থাকতেন। স্থানীয় বিধায়ক বা সাংসদ ওই পদ পেতেন। সেই পদ্ধতির পরিবর্তন করল সরকার। এখন তাঁরা কেবল সদস্য। এ ছাড়া রোগী কল্যাণ সমিতিতে থাকবেন এক জন করে জুনিয়র ডাক্তার, সিনিয়র ডাক্তার এবং নার্স। হাসপাতালের সুপারও সংশ্লিষ্ট সমিতির সদস্য হিসাবে থাকবেন।

পশ্চিমবঙ্গ চিকিৎসক ফোরামের সদস্য কৌশিক চাকী বলেন, ‘‘এর আগেও দলীয় সাংসদ, বিধায়ক থেকে নেতা রোগী কল্যাণ সমিতিতে ছিলেন। তাঁরা কতটা রোগীর কল্যাণ করেছেন, কতটা পার্টির করেছেন, সবাই দেখেছেন। তাই নতুন সমিতি থেকেও ভাল কিছু আশা করছি না।’’

Advertisement
আরও পড়ুন