Durga Puja 2022

পূজারীর আসনে সুলতা, বিজেপির পুজোয় ‘চমক’ থাকলেও অনাড়ম্বর বোধন, নেতাদের হাজিরায় অনিশ্চয়তা

উদ্বোধনে ছিলেন না বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কিংবা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দু’জনেই রইলেন কলকাতা থেকে অনেক দূরে নিজের এলাকা নন্দীগ্রাম আর খড়্গপুরে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২২ ১৭:২৫
রাজ্য বিজেপির পুজোয় পুরোহিত সুলতা মণ্ডল।

রাজ্য বিজেপির পুজোয় পুরোহিত সুলতা মণ্ডল।

মহিলা পুরোহিত নিয়োগ করে ‘চমক’ দেওয়ার কথা বলেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেই ‘চমক’ থাকলেও বিধাননগরের পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্র (ইজেডসিসি)-এ তৃতীয় ও শেষ বারের পুজো আয়োজনের ষষ্ঠীতে দেবীর বোধন একেবারেই অনাড়ম্বর। উদ্বোধনে সুকান্ত ছাড়া দলের উল্লেখযোগ্য নেতৃত্বের মধ্যে দেখা গিয়েছে মাত্র তিন জনকে। ছিলেন সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ এবং বিধায়ক তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল। আসেননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কিংবা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দু’জনেই রইলেন কলকাতা থেকে অনেক দূরে নিজের এলাকা নন্দীগ্রাম আর খড়্গপুরে। অন্য নেতারা কে কবে পুজোয় আসবেন, তা নিয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই রাজ্য নেতৃত্বের।

রাজ্য বিজেপি ২০২০ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে আগে পুজো শুরু করেছিল। মূল উদ্যোক্তা ছিলেন তখন বিজেপিতে থাকা সব্যসাচী দত্ত, মুকুল রায়েরা। ভার্চুয়াল মাধ্যমে পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। সেই চমক আর ছিল না বিধানসভা নির্বাচনে ‘আশা’ভঙ্গের পরে। গত বছরে হবে কি হবে না করেও বিজেপির দুর্গাপুজোয় ভাঙাহাট ছিল। এ বারে অবশ্য পুজো নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়নি। সুকান্ত জানিয়ে দেন, শেষ বারের দলীয় পুজো হবে। হিন্দু রীতি অনুযায়ী কোনও ব্রত বা পুজো এক বার শুরু করলে টানা তিন বার করতেই হয়। সেই রীতির বাধ্যবাধকতা মেনেই তৃতীয় ও শেষ বারের পুজোর আয়োজন।

Advertisement

সুকান্ত ছিলেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। তিনি উদ্ভিদবিদ্যার শিক্ষক হলেও বাংলার বিভাগের ছাত্রী সুলতা তাঁকে ‘সুকান্তস্যর’ হিসাবেই চেনেন। সেই সুলতা এ বার রাজ্য বিজেপির পুজো করবেন বলে আনন্দবাজার অনলাইনই প্রথম জানিয়েছিল। পরে সুকান্ত সেই ঘোষণা করার পর জানা যায়, ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের মধ্যে বিরোধিতা রয়েছে। অনেকেই মহিলা পুরোহিতের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি। যদিও শেষ পর্যন্ত সুকান্তের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে। তবে বিতর্কের কথা সুকান্ত স্বীকার করতে চাননি। যদিও গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, সপ্তমী থেকে মূল পুজোয় একজন পুরুষ পুরোহিতও থাকবেন। শ্যাম ও কূল উভয় বজায় রাখতেই মূল দায়িত্বে সুলতাকে রাখা হলেও সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর থানার বাতাসকুড়ি গ্রামের মেয়ে সুলতা আরও দুই সঙ্গীকে নিয়ে ইতিমধ্যেই এসেছেন কলকাতায়। থাকবেন একাদশী পর্যন্ত।

অন্য দিকে, পুজো মণ্ডপেও রাজনীতির ছোঁয়া রেখেছে বিজেপি। ভোট পরবর্তী হিংসা থেকে শিক্ষক নিয়োগে ‘দুর্নীতি’ নিয়ে বিভিন্ন পোস্টার ও ছবির প্রদর্শনী রয়েছে পুজো প্রাঙ্গণে। এমন আয়োজনের আগেই নিন্দা করেছিল তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘‘যাঁদের কোনও সামাজিক পুজোর সঙ্গে যোগ নেই, সরকারি হল ভাড়া করে আয়োজন করতে হয় তাঁদের কোনও গুরুত্বই নেই বাংলার মানুষের কাছে।’’ একই সঙ্গে প্রদর্শনীকে ‘ডাস্টবিন’ বলে আক্রমণ করেন কুণাল।

শনিবার পুজো উদ্বোধনের পরেও রাজনীতির কথা শোনা যায় সুকান্তের মুখে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা যখন মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরছি তখন কলকাতার রাস্তায় যুবক-যুবতীরা চাকরির দাবিতে অবস্থান করছেন। আদালত বলছে ৭,০০০ ভুয়ো চাকরি দেওয়া হয়েছে। কলকাতার বিভিন্ন জায়গা থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হচ্ছে। এই দুর্গতি থেকে মা দুর্গা আমাদের রক্ষা করুন।’’ একই সঙ্গে বাংলায় শান্তির জন্য তাঁরা প্রার্থনা করবেন জানিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে যেন কোনও মায়ের কোল খালি না হয়, এটাই মা দুর্গার কাছে আমার এবং আমাদের প্রার্থনা।’’

আরও পড়ুন
Advertisement