প্রয়াত সাংবাদিক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়।
সাংবাদিক এবং বাংলা টেলিভিশনের অন্যতম প্রধান সঞ্চালক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রয়াত। বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।
কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেরে উঠে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বাড়িও ফিরে গিয়েছিলেন। কিন্তু দিনকয়েকের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে আবারও ভর্তি হতে হয় সেই হাসপাতালে। সেই অসুস্থতা থেকে আর তাঁকে ফিরিয়ে আনতে পারেননি চিকিৎসকরা। রবিবার রাতে সাড়ে ৯টা নাগাদ অঞ্জনের মৃত্যু হয়।
তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘বাংলার অন্যতম সেরা টেলিভিশন সঞ্চালক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে দুঃখিত। তাঁর পরিবার ও সহকর্মীদের সমবেদনা জানানোর কোনও ভাষা নেই’।
শোকজ্ঞাপন করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় টুইটারে লিখেছেন, সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যতে তিনি হতবাক ও শোকাহত।
Stunned and saddened at untimely demise of Anjan Bandyopadhyay editor @Zee24Ghanta @ZeeNews.
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) May 16, 2021
Cruel hand of destiny has snatched at young age a man full of simplicity.
He leaves a void in journalism not easy to fill. Pray Almighty to bestow eternal peace on departed soul.
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন ও তাঁর পরিবার পরিজনদের সমবেদনা জানিয়েছেন।
কলকাতা প্রেস ক্লাব এক বিবৃতিতে তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে। দিলীপ ঘোষ শোক জানিয়ে লিখেছেন, তাঁর মৃত্যুতে সাংবাদিক জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। তাঁর আত্মার সদগতি কামনা করি।
বর্ধমানের কয়লা খনি অঞ্চলে বেড়ে ওঠা অঞ্জনের স্কুলজীবন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে। এই কৃতী ছাত্রের পরের গন্তব্য প্রেসিডেন্সি কলেজ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার স্বর্ণপদক জয়ী অঞ্জন তরুণ বয়সেই চাকরিতে ঢোকেন আনন্দবাজার পত্রিকায়। কলকাতা ছাড়াও অঞ্জন আনন্দবাজারের পটনা, ত্রিপুরা এবং দিল্লি ব্যুরোতে কৃতিত্বের সঙ্গে কাজ করেছেন।
এর পর শুরু হয় অঞ্জনের টেলিভিশন জীবন। ইটিভি, আকাশ বাংলা হয়ে একটা বড় সময় ২৪ ঘণ্টায়। এর পর অঞ্জন দায়িত্ব নেন আনন্দবাজার ডিজিটালের সম্পাদনার।
গত বছর ফের প্রত্যাবর্তন টেলিভিশনে। প্রথমে টিভি নাইন এবং তার পর ২৪ ঘণ্টার সম্পাদক। তখন বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক-পর্ব। জেলায় জেলায় সফর শুরু হয় অঞ্জনের। নেব নেব করেও কোভিড টিকা নেওয়ার সময় করে উঠতে পারেননি।
ভোট প্রক্রিয়ার মধ্যেই গত ১৪ এপ্রিল জ্বরে আক্রান্ত অঞ্জনের কোভিড পজিটিভ ধরা পরে। ভর্তি হন হাসপাতালে। সেরে উঠে কিছুদিন ওই হাসপাতালেরই স্যাটেলাইট সেন্টারে বিশ্রামে ছিলেন। তার পর বাড়ি ফিরে যান।
কিন্তু আবার জ্বর। আবার হাসপাতাল। ফুসফুসের সংক্রমণ ঘোরালো হয়ে ওঠায় ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয় তাঁকে। কয়েকদিন লড়াই করার পর রবিবার রাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে টুইটারে লিখেছেন, এত তাড়াতাড়ি এত বড় ব্যক্তিত্ব হারিয়ে যাওয়ার জন্য হতভম্ব। তাঁর মৃত্যু সাংবাদিকতা জগতে এক শূন্যতা তৈরি করবে। শোক জানিয়েছেন প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানও।