West Bengal Panchayat Election 2023

সক্রিয়তার কেন্দ্রে রাজভবন, ‘ভোট-সন্ত্রাসের’ অভিযোগ জানাতে বোসের কাছে বিজেপির তথ্যসন্ধানী দল

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার পাঠানো চার সদস্যের তথ্যানুসন্ধান দল বৃহস্পতিবার সকালে পৌঁছয় রাজভবনে। একই দিনে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন বিএসএফের স্পেশাল ডিজি স্তরের এক আধিকারিক।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৩ ১২:৩৬
Fact finding committee of BJP meet as WB Governor CV Ananda Bose

ভোট গণনার পরই আবার সক্রিয় রাজভবন। — ফাইল চিত্র।

পঞ্চায়েত ভোটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরেই অশান্তি রুখতে রাজভবনে ‘শান্তিকক্ষ’ খুলেছিলেন তিনি। ভোটপর্ব মিটতেই হিংসার অভিযোগ তুলে ছুটে গিয়েছিলেন দিল্লির ‘শাহি’ দরবারে। এ বার বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বাসভবন ঘিরে শুরু হল নতুন তৎপরতা। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার পাঠানো চার সদস্যের তথ্যানুসন্ধান দল (ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম) বৃহস্পতিবার সকালে পৌঁছে গেল রাজভবনে। একই দিনে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন বিএসএফের স্পেশাল ডিজি স্তরের এক আধিকারিক।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ভোটপর্বে অশান্তির আবহে বোসের সঙ্গে শাহের সাক্ষাতের আগেই বাংলায় তথ্যানুসন্ধান দল পাঠানোর কথা জানিয়েছিল বিজেপি। বুধবার বাংলায় পৌঁছয় সেই দল। বিজেপির তথ্যানুসন্ধান কমিটিতে রয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদ, বিজেপি সাংসদ তথা মুম্বই পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার সত্যপাল সিংহ, বিজেপি সাংসদ রাজদীপ রায়, বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি তথা সাংসদ রেখা বর্মা। বুধবার তাঁরা উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাটের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। ওই এলাকাগুলিতে পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে একাধিক হিংসার ঘটনা ঘটেছিল।বৃহস্পতিবার রাজভবন থেকে বেরিয়ে, নড্ডার পাঠানো দলের নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘আমরা বুধবার সন্ত্রাসের শিকার কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি। আশ্চর্য হয়ে দেখেছি, ১২-১৩ সালের শিশুও হামলার শিকার হয়েছে। মিনাখাঁরা রাজমিস্ত্রি শান্তনু পাত্রের বাড়ি গিয়েছিলাম। তামিলনাড়ুতে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করা শান্তনু তাঁর বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি লাগিয়েছিলেন। সেই অপরাধে তাঁর বাড়ি তছনছ করা হয়েছে।’’

Advertisement

বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া বসিরহাট এলাকায় দুষ্কৃতীদের তৎপরতা মাত্রাছাড়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। রবিশঙ্কর এর পর বলেন, ‘‘আজ আমরা ডায়মন্ড হারবার যাব। কেমন এলাকা, তা আপনারা জানেন। আশা করব, আমাদের বাধা দেওয়া হবে না। হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে আমরা দেখা করতে পারব।’’শনিবার রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা, প্রাণহানি, ভোট লুটের একাধিক ঘটনা ঘটেছিল। পরের দিনেই দিল্লি রওনা হয়েছিলেন রাজ্যপাল। দিল্লি রওনা হওয়ার আগে তিনি বলেছিলেন, ‘‘তাজা বাতাস নিতে যাচ্ছি।’’ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতায় ফিরেছিলেন তিনি। সে দিন সকাল থেকেই শুরু হয়েছিল ভোটের গণনা। গণনাপর্বের মাঝেই ভাঙড়ে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল।সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে শাহের বাসভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ বৈঠক হয়। সেই বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছিল চরমে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন তিনি। যদিও ওই দুই সাক্ষাতের পরে দিল্লিতে মুখ খোলেননি রাজ্যপাল। কিন্তু মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠকে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে বোস বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমার সাংবিধানিক সহকর্মী। তাই তাঁর সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে, আমি তা প্রকাশ্যে আনব না।’’

এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে সন্ত্রাস ঠেকাতে প্রয়োজনে কেন্দ্র কড়া পদক্ষেপ করবে বলে জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের সন্ত্রাস নিয়ে অভিযোগ জানানোর পরে আমাদের দলের সর্বভারতীয় সভাপতি ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম’ পাঠিয়েছেন। তাঁরা হিংসা কবলিত এলাকাগুলি ঘুরে দেখে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে শাসকদলের সন্ত্রাসের কথা জানাবেন।’’

তৃণমূলের মুখপাত্র তথা দলের বিধায়ক তাপস রায় বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে হারের ধাক্কার হতোদ্যম হয়ে পড়েছেন রাজ্য বিজেপির নেতা-কর্মীরা। তাই মুখরক্ষার জন্য সন্ত্রাসের মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন।’’ সেই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বিজেপির ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম’ বাংলা ঘুরে দেখছেন ভাল কথা, কিন্তু তাঁরা বিজেপি শাসিত মণিপুরের হিংসা কবলিত এলাকা ঘুরে দেখছে না কেন? তবে কি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই বাংলাকে নিশানা করা হচ্ছে?’’

আরও পড়ুন
Advertisement