Beliaghata Murder Case

সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে ভাইকে খুন দাদার

গত বৃহস্পতিবার বেলেঘাটার একটি চারতলা বাড়ির তেতলার ঘর থেকে রোহনের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রোহনের বাবা অন্যত্র থাকেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৫ ০৭:৪৩
রোহনকে খুন করেছিলেন অভিজিৎ।

রোহনকে খুন করেছিলেন অভিজিৎ। —প্রতীকী চিত্র।

সম্পত্তিগত বিবাদের জেরেই খুন হতে হয়েছে বেলেঘাটার কলিমুদ্দিন সরকার লেনের বাসিন্দা রোহন মণ্ডলকে। রবিবার তাঁর দাদা অভিজিৎকে বেলেঘাটা থানার পুলিশ গ্রেফতার করার পরে এমনই তথ্য সামনে এসেছে। এ দিন পুলিশ এই খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করে বাড়ির কাছে একটি নালা থেকে। পুলিশের দাবি, জেরায় অভিজিৎ ভাইকে খুনের কথা স্বীকার করেছেন। আজ, সোমবার তাঁকে আদালতে তোলার কথা।

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার বেলেঘাটার একটি চারতলা বাড়ির তেতলার ঘর থেকে রোহনের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রোহনের বাবা অন্যত্র থাকেন। তাঁর মা কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন। বছরখানেক আগে রোহনের বিয়ে হলেও তাঁর স্ত্রী বর্তমানে আলাদা থাকেন। এ-ও জানা যায়, বেশির ভাগ সময়েই রোহন মত্ত অবস্থায় থাকতেন। তিনি অবসাদে ভুগছিলেন এবং আগেও একাধিক বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিশ।

শুক্রবার ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট আসে। ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকেরা পুলিশকে জানান, মৃতদেহের পিঠের আঘাতটি ওই যুবকের নিজের পক্ষে করা সম্ভব নয়। এর পরেই পুলিশ খুনের মামলা রুজু করে। শনিবার রোহনদের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, তাঁর ফ্ল্যাট তালাবন্ধ। পুলিশ ঘরটি সিল করে দিয়েছে। ওই বহুতলের দোতলায় থাকেন তাঁর দাদা অভিজিৎ, তিনি অবিবাহিত। এক প্রতিবেশীর দাবি, প্রোমোটিং হওয়ার পরে এই বহুতলে রোহনের মা ও দাদা একটি করে ফ্ল্যাট পান। রোহনের বাবা চলে যাওয়ার পরে মায়ের ফ্ল্যাটেই থাকতেন রোহন। ওই প্রতিবেশীর দাবি, মাঝেমধ্যেই বন্ধুদের এনে মদ্যপান করতেন রোহন। বুধবারেও বন্ধুরা আসেন। রাতে এক আত্মীয় গিয়ে রোহনকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে তাঁকে নিয়ে গিয়ে ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ করিয়ে আনেন। বৃহস্পতিবার ঘর থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। দরজা বাইরে থেকে ভেজানো ছিল।

রোহনের দাদাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে পুলিশের সন্দেহ হয়। লাগাতার জেরায় তিনি অপরাধ স্বীকার করেন। অভিজিৎ জানান, নিজের ফ্ল্যাট বিক্রি করতে চেয়ে তিনি এক জনের থেকে প্রায় চার লক্ষ টাকা অগ্রিম নেন। ফ্ল্যাট বিক্রি করে ভাইয়ের ফ্ল্যাটে গিয়ে থাকতে চাইছিলেন। কিন্তু রোহন তাতে রাজি ছিলেন না। তা নিয়ে বচসার মধ্যেই বুধবার ভাইকে অভিজিৎ খুন করেন। বন্ধুদের এনে মদ্যপান থেকে ব্যান্ডেজ করানো— সব তথ্যই ভুয়ো বলে পুলিশের দাবি। ঘটনায় ওই বহুতলের অন্য বাসিন্দাদের ভূমিকাও পুলিশ খতিয়ে দেখছে।

Advertisement
আরও পড়ুন