West Bengal Ration Case

মন্ত্রী বালুর চিঠির সূত্র ধরেই গ্রেফতার বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য! কী লেখা রয়েছে সেই চিঠিতে?

ইডির হাতে যে চিঠি এসেছে, তা বাংলা এবং ইংরেজি মিশিয়ে লেখা। ১৯ ডিসেম্বর জ্যোতিপ্রিয়কে যখন জেরা করা হয়, তখন তিনি সেই চিঠির কথা স্বীকার করেছিলেন। তাতে একাধিক জনের নামের উল্লেখ রয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:৪১
image of jyotipriya mallick and shankar

(বাঁ দিকে) জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। শঙ্কর আঢ্য (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ধৃত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চিঠির সূত্র ধরেই গ্রেফতার তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্য। শুক্রবার রাতেই এ কথা জানিয়েছিলেন শঙ্করের স্ত্রী জ্যোৎস্না আঢ্য। তাঁর দাবি ছিল, ইডির আধিকারিক শঙ্করকে গ্রেফতারের সময় তাঁকে এ কথা জানিয়েছেন। এ বার আদালতে একই দাবি করল ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা শনিবার আদালতে দাবি করেছে, হাসপাতালে মেয়ের হাতে চিঠি তুলে দিচ্ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়। সেই চিঠির সূত্র ধরেই গ্রেফতার করা হয়েছে বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্করকে।

Advertisement

ইডির হাতে গ্রেফতারের পর এখন এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি জ্যোতিপ্রিয়। শনিবার ইডি দাবি করেছে, হাসপাতালে চিঠির মাধ্যমে জ্যোতিপ্রিয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সেই চিঠি তাদের হাতে এসেছে। বাংলা এবং ইংরেজি মিশিয়ে লেখা ছিল সেই চিঠি। ১৯ ডিসেম্বর জ্যোতিপ্রিয়কে জেরা করা হয় যখন, তখন তিনি সেই চিঠির কথা স্বীকার করেন। তাতে একাধিক জনের নাম উল্লেখ রয়েছে বলেও দাবি ইডির। ইডি আরও দাবি করেছে, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ১৬ ডিসেম্বর জ্যোতিপ্রিয়ের ঘর থেকে সিসি ক্যামেরা খোলা হচ্ছিল। সেই সময় ওই চিঠি মেয়েকে দিচ্ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। ইডির আরও দাবি, বাবা-মেয়ের মধ্যে এই চিঠি বিনিময় হয়েছিল। সেই চিঠি ধরে ফেলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যেরা। হাসপাতালে জ্যোতিপ্রিয়ের নিরাপত্তায় বহাল ছিলেন সিআরপিএফ জওয়ানেরা। তাঁদের মাধ্যমেই ইডির হাতে চিঠিটি এসেছে বলে দাবি। ইডি আরও দাবি করেছে, ওই চিঠিতে ‘বিস্ফোরক’ তথ্য রয়েছে।

শুক্রবার রাতে শঙ্করের গ্রেফতারির পর তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্না জানিয়েছিলেন, জ্যোতিপ্রিয়ের সূত্র ধরেই তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘শুক্রবার রাত ১২টা ১৫ মিনিটে এক জন অফিসার এলেন। এসে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কাগজ দেখালেন। বললেন, জ্যোতিপ্রিয় আপনার নাম বলেছে। বা কেউ বলেছে। তার জন্য গ্রেফতার করল।’’ এর পরেই জ্যোৎস্না জানিয়েছেন, সারা দিন শঙ্করের সঙ্গে ব্যবসার বিষয়ে ইডি অফিসারেরা কথা বললেও জ্যোতিপ্রিয় নিয়ে কোনও কথা বলেননি। সব রকম সহযোগিতার পরেও রাত সাড়ে ১২টার সময় গ্রেফতার করা হয় তাঁর স্বামীকে। জ্যোৎস্না বলেন, ‘‘জ্যোতিপ্রিয় জেলার সভাপতি ছিলেন। সকলের কাছেই আসতেন। আমরাও যেতাম। এখন দেখছি নাটক। সারা দিন সহযোগিতা করলাম। শেষে এক জন অফিসার ব্যাগ থেকে কাগজ বার করে দেখালেন এবং বললেন জ্যোতিপ্রিয়ের জন্য গ্রেফতার করলাম।’’

শুক্রবার গ্রেফতারির পর বনগাঁয় শঙ্করের বাড়ির সামনে থেকে যখন তাঁকে গাড়িতে তোলা হচ্ছিল, আশপাশে অনেকে জড়ো হন। মহিলারাও ছিলেন সেই দলে। তাঁরা ইডির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ইডির তরফে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা বিক্ষোভকারীদের আটকাতে লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যান। রাস্তা ফাঁকা করার পরেই এগোয় শঙ্করের গাড়ি। ইডি সূত্রে খবর, এই গোটা ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে। তারই তোড়জোড় চলছে। যদিও সন্দেশখালির মতো ঘটনা হয়নি। শুক্রবার সকালে সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দিতে গেলে ইডি অফিসারদের দিকে তেড়ে আসেন ‘অনুগামী’রা। অভিযোগ, তাঁদের উপর হামলা চালানো হয়। এতে গুরুতর আহত হন তিন ইডি আধিকারিক।

Advertisement
আরও পড়ুন