(বাঁ দিক থেকে) রেশন ‘দুর্নীতি’তে ধৃত বনগাঁর নেতা শঙ্কর আঢ্য এবং রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —নিজস্ব চিত্র।
অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে ‘লেনদেন’ করেছেন রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া বনগাঁর তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য। শনিবার আদালতে তেমনটাই জানাল ইডি। তাদের দাবি, মোট ৯০টি ফরেক্স সংস্থার (বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার সংস্থা) মাধ্যমে এই টাকা লেনদেন করা হয়েছে। বিভিন্ন বিদেশি অ্যাকাউন্টে ডলার আকারে গিয়েছে এই বিপুল পরিমাণ টাকা। শঙ্করের এক পরিচিতের কাছ থেকে সে কথা জানা গিয়েছে বলে দাবি ইডির।
শনিবার শঙ্করকে আদালতে হাজির করিয়েছে ইডি। সেখানেই তারা দাবি করেছে, শঙ্করের মাধ্যমে বিদেশে পাঠানো প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৯ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুর। এই টাকা প্রথমে ফরেক্স সংস্থার মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রায় (মূলত ডলার) পরিবর্তন করা হয়েছে। ইডি এ-ও জানিয়েছে, টাকা গিয়েছে দুবাইতে। হয় সরাসরি, নয়তো বাংলাদেশ হয়ে ওই টাকা দুবাইতে পাঠানো হয়েছে।
ইডির দাবি, গত ১০ বছর ধরে এই ‘দুর্নীতি’ চলছে। সে কথা শুনে বিচারক বিস্ময় প্রকাশ করেন। বলেন, ‘‘এত টাকার লেনদেন, আর বলা হচ্ছে এটা নাকি গরিব রাজ্য!’’
আদালতে ইডির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শঙ্করের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল ফরেক্স বা বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার বৈধ ব্যবসা করেন। এই ব্যবসা বেআইনি নয়। তাঁদের দাবি, যথাযথ নিয়ম মেনেই কাজ করা হয়।
ধৃত শঙ্করকে ১৪ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়েছে ইডি। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। আগামী ১৪ দিন ইডি হেফাজতেই থাকতে হবে তাঁকে। ইডি আদালতে জানায়, হাসপাতালে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের সঙ্গে চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ রেখেছিলেন শঙ্কর। সেই চিঠি ইডি হাতে পেয়েছে। সেখানে একাধিক নামের উল্লেখও রয়েছে। ইডির দাবি, জ্যোতিপ্রিয় এবং তাঁর কন্যার মধ্যে এই চিঠি লেনদেন হয়।