ED

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ‘ওয়েলফেয়ার’ করা ‘মানিক-ঘনিষ্ঠ’ তাপসের একাধিক ডেরায় হানা ইডির

ইডি সূত্রে খবর, তাপস প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’। স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, অফিসটি চালাতেন তাপস মণ্ডল।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
বারাসত ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২২ ১৩:৫৮
তাপস মণ্ডল (বাম দিকে)। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য।

তাপস মণ্ডল (বাম দিকে)। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র।

শুধু মহিষবাথানই নয়, নিয়োগ-দুর্নীতি কাণ্ডে শনিবার সকাল থেকে শহরের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। শনিবার সকালে মহিষবাথানের ট্রেনিং সেন্টার ‘মিনার্ভা এডুকেশনাল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’র অফিসে হানা দেন ইডির আধিকারিকরা। সেখান থেকে উদ্ধার হওয়া নথির ভিত্তিতে পরে এপিসি রোডের একটি পাঁচ তলার ফ্ল্যাটে যান ইডি আধিকারিকরা। কিন্তু সেই ফ্ল্যাটে পৌঁছে তাঁরা দেখেন, সেটি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

এর পর ইডি আধিকারিকরা শ্রীগোপাল মল্লিক লেনের একটি বাড়িতে হানা দেন। সেখানে এখনও তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে ইডি। ইডি সূত্রের খবর, ওই বহুতলের মালিক শৈবাল ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ওই বাড়ির একটি ঘর ভাড়া নিয়ে জনৈক তাপস মণ্ডল ১৯৯২-৯৩ সালে মিনার্ভা এডুকেশনাল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামে একটি কোচিং সেন্টার চালাতেন। পরে একটি ঝামেলার কারণে তাঁকে সেই বাড়ি থেকে উঠে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ইডি মনে করছে এই একই নামের মহিষবাথানের ট্রেনিং সেন্টারটির মালিকও এই তাপস মণ্ডলই। শনিবার শ্রীগোপাল মল্লিক লেনের বাড়ির মালিক জানতে পারেন, একাধিক জায়গায় নিজের স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ওই বাড়ির নাম করতেন তাপস। সেই সূত্রেই শনিবার ওই বাড়িতে হানা দেন ইডি আধিকারিকরা। বারাসতে তাপস মণ্ডলের বাড়িতে হানা দিয়ে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছেন ইডি আধিকারিকরা। বারাসতের আর এক বাসিন্দা চন্দন মাইতির বাড়িতেও হানা দেয় ইডি। এঁদের বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির।

Advertisement

ইডি সূত্রে খবর, তাপস প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’। মহিষবাথানের ট্রেনিং সেন্টারটির অফিসে চাকরিপ্রার্থীদের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন চাকরিমুখী কোর্স করানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হত বলে দাবি ইডির। চাকরি দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতে পারে বলে মনে করছেন ইডি আধিকারিকরা। কিন্তু ওই ট্রেনিং সেন্টারে আদৌ কোনও কোর্স করানো হয়েছিল কি না, চাকরিপ্রার্থীদের কেউ চাকরি পেয়েছিলেন কি না, কিংবা চাকরিপ্রার্থীরা কত টাকা দিয়েছিলেন, তা তদন্তসাপেক্ষ বলে ইডি সূত্রে খবর। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অফিসটি চালাতেন তাপস।

দীর্ঘ জেরার পর, গত মঙ্গলবার ইডি গ্রেফতার করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের মানিককে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর যাদবপুরের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয়েছে সিডিবন্দি কয়েকশো চাকরিপ্রার্থীর নামের তালিকা। প্রাথমিক ভাবে ইডি এ-ও জানতে পেরেছে, ওই তালিকার মধ্যে ৯০ শতাংশ প্রার্থীই চাকরির জন্য মনোনীত হয়েছেন। সবিস্তার তথ্য নেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হওয়া প্যানেলও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, মানিকের বাড়িতে কী ভাবে এবং কেন ওই নামের তালিকা এল, তার উত্তরও খুঁজছে ইডি। বাড়িতে কী ভাবে এবং কেন ওই নামের তালিকা এল তার উত্তরও খুঁজছে ইডি।

আরও পড়ুন
Advertisement