Ration Distribution Case

‘সুদ নিও, মূল টাকায় হাত দিও না’, লিখেছিলেন বালু, মুকুলের কাছে কি জমা ২০ কোটি? হিসাব কষছে ইডি

রেশন মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে মেয়েকে চিঠি লিখেছিলেন বালু। সেখানে মুকুলের নাম ছিল। মুকুলের কাছ থেকে সুদের টাকা নিতে বলেছিলেন, আসলে হাত দিতে বারণ করেছিলেন বালু।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৪ ১৬:৩০
(বাঁ দিকে) জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। রেশন মামলায় ধৃত আলিফ নুর ওরফে মুকুল রহমান (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। রেশন মামলায় ধৃত আলিফ নুর ওরফে মুকুল রহমান (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

হাসপাতাল থেকে মেয়ে প্রিয়দর্শিনী মল্লিককে চিঠি লিখেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। রেশন ‘দুর্নীতি’ মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর লেখা ওই চিঠি ইডির হাতে আসে। তার পাঠোদ্ধার করেই দুর্নীতির টাকার সন্ধান করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। রেশন মামলায় ধৃত আলিফ নুর ওরফে মুকুল রহমানের কাছে ২০ কোটি টাকা রাখা হয়েছে বলে অনুমান ইডির। হিসাব কষে তেমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে।

Advertisement

ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়েকে লেখা ওই চিঠিতে মুকুলের নাম নিয়েছিলেন বালু। ছিল শাহজাহান এবং ডাকুর নামও। পরবর্তী কালে শাহজাহান শেখ এবং শঙ্কর আঢ্যকে গ্রেফতার করা হয়। এই শঙ্করই ‘ডাকু’ নামে পরিচিত বলে জানা যায়। সম্প্রতি এই মামলায় ইডি গ্রেফতার করেছে আনিসুর রহমান এবং তাঁর ভাই আলিফকে। ইডির নথিতে দাবি, এই আলিফ ওরফে মুকুলের কাছ থেকেই কন্যাকে টাকা নিতে বলেছিলেন বালু। চিঠিতে বলা হয়েছিল, মাসে মাসে ১০ লক্ষ টাকা করে সুদ দেবেন মুকুল।

শুধু তা-ই নয়, চিঠিতে কন্যাকে সুদের টাকা নিতে নির্দেশ দিলেও মূল টাকায় হাত না দিতে বলে দিয়েছিলেন বালু। ইডি ওই চিঠির যে অনুবাদ করেছে তা হল, ‘‘কাউকে টাকা দেওয়ার প্রয়োজন হলে মুকুল, শাহজাহান এবং ডাকু টাকা দেবে। মুকুল মাসে ১০ লক্ষ করে দেবে। এটা সুদের টাকা। মূল টাকাও ওর কাছেই আছে। ওতে হাত দিও না।’’

ইডির বক্তব্য, ১০ লক্ষ টাকা যদি মাসিক সুদই হয়, তবে মূল টাকা কত? তারও হিসাব কষার চেষ্টা করেছেন কেন্দ্রীয় আধিকারিকেরা। নথিতে দাবি, সাধারণ ভাবে কোনও ফিক্সড ডিপোজ়িট অ্যাকাউন্টে গড়ে ছয় শতাংশ হারে বার্ষিক সুদ দেওয়া হয়ে থাকে। সেই হিসাব ধরলে মূল টাকার পরিমাণ হতে পারে ২০ কোটি পর্যন্ত। অর্থাৎ, ছয় শতাংশ সুদ ধরলে ২০ কোটি টাকার সুদের মূল্য হয় ১০ লক্ষ। ইডির অনুমান, রেশন দুর্নীতির টাকাই বালু জমা রেখেছিলেন মুকুলের কাছে। মাসে মাসে সেই সুদ পৌঁছে যেত বালু এবং তাঁর পরিবারের কাছে। এই লেনদেনের ইঙ্গিত ইডি পেয়েছে জ্যোতিপ্রিয়ের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ) শান্তনু ভট্টাচার্যের দফতর থেকে উদ্ধার হওয়া নথিতেও। জ্যোতিপ্রিয়ের পাশাপাশি আনিসুর এবং মুকুলেরও সিএ শান্তনু।

ইডি সূত্রে খবর, নগদ ৯৪ লক্ষ টাকা আনিসুর এবং তাঁর ভাইয়ের কাছ থেকে নিয়েছিলেন বালু। পরে সেই টাকা ব্যাঙ্কে রাখা হয়। এর পর দ্বিতীয় দফায় আরও ৭০ লক্ষ টাকা বালুকে দেন দুই ভাই। এ ভাবে দুই দফায় মোট ১.৬৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল তাঁদের মধ্যে। যদিও প্রাথমিক ভাবে জেরায় এই লেনদেনের কথা স্বীকার করেননি আনিসুর বা তাঁর ভাই।

আরও পড়ুন
Advertisement