এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এক দশকে প্রায় সাড়ে ছ’হাজার কোটি টাকার ব্যাঙ্ক আমানত তছরুপ করা হয়েছে বলে আদালতে দাবি করল ইডি। মঙ্গলবার রাতে কয়েক হাজার কোটি টাকার ব্যাঙ্ক জালিয়াতি ও আর্থিক প্রতারণার মামলায় সঞ্জয় সুরেখা নামে এক ইস্পাত ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে ইডি। বুধবার তাঁকে বিচার ভবনের বিশেষ সিবিআই কোর্টে পেশ করা হলে ইডি-র কৌঁসুলি অরিজিৎ চক্রবর্তী অভিযুক্তের ১৪ দিনের ইডি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘‘২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৬টি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে ৬,২০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছিল এবং ব্যবসায়লোকসান দেখিয়ে শতাধিক ভুয়ো সংস্থার মারফত তা আত্মসাৎকরা হয়েছে।’’
সূত্রের খবর, ২০১৯ সালে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছিল সিবিআই। ২০২২ সালে সিবিআইয়ের এফআইআরের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে ইডি। সেই মামলায় মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের পর সঞ্জয়কে গ্রেফতার করা হয়। এ দিন সওয়াল-জবাব পর্ব শেষে বিচারক সঞ্জয়কে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইডি হেফাজতে পাঠিয়েছেন।
এ দিন ইডি-র কৌঁসুলি আরও দাবি করেন, ভুয়ো সংস্থার ডিরেক্টরেরা সঞ্জয়ের কর্মচারী। সঞ্জয় তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তৈরি করা সংস্থাতেও ওই টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। বৃহত্তর ষড়যন্ত্র এবং আর্থিক প্রতারণার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সঞ্জয়কে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার প্রয়োজন। সঞ্জয়ের আইনজীবী দেবাশিস রায় ও অভীক ঘটক অবশ্য জামিনের আবেদন করেননি। তাঁরা বলেন, ‘‘বেআইনিভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি অসুস্থ। সময় মতো ওষুধের প্রয়োজন। বাড়ি থেকে তৈরি খাবার দেওয়ার আর্জিও মঞ্জুর করা হোক।’’ যদিও বাড়ির খাবার দেওয়া নিয়ে ইডি-র কৌঁসুলি আপত্তি জানিয়ে বলেন যে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সময় মতো সব ওষুধদেওয়া হবে।
ইডি সূত্রের দাবি, মঙ্গলবার সঞ্জয়ের বালিগঞ্জের ম্যান্ডেভিল গার্ডেনসের বাড়ি থেকে সাড়ে চার কোটি টাকা গয়না ও ছ’টি বিদেশি বিলাসবহুল গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বস্তুত, এই মামলায় মঙ্গলবার সকাল থেকেই কলকাতা ও লাগোয়া কয়েকটি জেলার ১৩টি স্থানে তল্লাশি অভিযান চালায় ইডি। সঞ্জয় ঘনিষ্ঠ একাধিক ব্যবসায়ী ও আর্থিক পরামর্শদাতা সংস্থার কর্তাদের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়।