অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
শনিবার সকাল ৮টায় হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার কথা। তার ঠিক ১৪ ঘণ্টা আগে জানা গেল, দিল্লি যাওয়ার বিশেষ ট্রেনের অনুমোদনই মেলেনি। ফলে শনিবারের দিল্লিগামী ‘তৃণমূল এক্সপ্রেস’ হাওড়া থেকে ছাড়ছে না।
সোম ও মঙ্গলবার দিল্লিতে রয়েছে তৃণমূলের বিক্ষোভ কর্মসূচি। আগে থেকেই বলা হয়েছিল কর্মী, সমর্থকেরা দলের পক্ষে ভাড়া করা বিশেষ ট্রেনে করে দিল্লি যাবেন। সেই রকম প্রস্তুতি ছিল তৃণমূলের। শাসকদল সূত্রে জানা গিয়েছিল, ২২ বগির একটি এক্সপ্রেস ট্রেন বুক করা হয়েছে। সেই মতো তৃণমূল সমর্থকেরা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রয়েছেন। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যায় জানা যায়, পূর্ব রেল এমন কোনও বিশেষ ট্রেন দিচ্ছে না। তবে রেলের পক্ষে তৃণমূলকে কোনও চিঠি দেওয়া হয়নি। পূর্ব রেলের পক্ষে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে ভারতীয় রেলের অধীনে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কেটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজ়ম কর্পোরেশন লিমিটেড (আইআরসিটিসি)-কে। সেখানে রেল জানিয়েছে, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের জন্য যেমন যেমন বগির উল্লেখ করে আইআরসিটিসি ট্রেন চেয়েছে তা এই মুহূর্তে দেওয়া সম্ভব নয়।
প্রসঙ্গত, রেলের থেকে গোটা ট্রেন ভাড়া নেওয়ার দু’টি পদ্ধতি রয়েছে। একটি পদ্ধতিতে সরাসরি রেল (এ ক্ষেত্রে পূর্ব রেল)-এর কাছে আবেদন জানাতে হয়। অন্য পদ্ধতিতে আইআরসিটিসি-র মাধ্যমে ‘বুক’ করা যায়। সে ক্ষেত্রে আইআরসিটিসি-র গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজারের কাছে আবেদন করতে হয়। আইআরসিটিসি রেলের কাছ থেকে বিশেষ ট্রেন নিয়ে ব্যবস্থা করে দেয়। এ ক্ষেত্রে তৃণমূল দ্বিতীয় পদ্ধতিটাই নিয়েছিল। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, দল ৫০ লাখ টাকা ভাড়া এবং ১১ লাখ টাকা সিকিওরিটি ডিপোজিট দিয়ে আইআরসিটিসি-র কাছে বিশেষ ট্রেনের আবেদন করেছিল। প্যান্ট্রি-সহ ২২টি স্লিপার বগির আবেদন ছিল। দল নিশ্চিত ছিল সেই ট্রেন পাওয়া যাবে এবং সঠিক সময়ে হাওড়া থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবে। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি তাতে কোনও ট্রেনই পাওয়া যাচ্ছে না।
রেলের বক্তব্য, তারা এ বিষয়ে কিছু জানত না। আইআরসিটিসি তাদের কাছে ট্রেন চায়। তবে যেমন যেমন বগির উল্লেখ করে ট্রেন চাওয়া হয়ছে, তা দেওয়া সম্ভব নয় বলেই আইআরসিটিসি-কে জানানো হয়েছে। পূর্ব রেলের মুখ জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘আইআরসিটিসি আমাদের কাছে ট্রেনের জন্য বলেছিল। কিন্তু যেমন বগির ট্রেন চাওয়া হয়েছিল তা আমাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা সেটা আইআরসিটিসিকে জানিয়ে দিয়েছি।’’
তৃণমূল অবশ্য এর পিছনে কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপির রাজনীতি দেখছে। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই করা হয়েছে। বিজেপি যে তৃণমূলকে ভয় পাচ্ছে এটা তারই প্রমাণ। তবে এ সব করে তৃণমূলকে রোখা যাবে না।’’
বিজেপি নেতারা অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্যে নারাজ। দলের রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমি রেলের মুখপাত্র নই। তাই রেল কেন ট্রেন দিতে পারছে না সে নিয়ে আমি কোনও কথাই বলতে চাই না।’’