নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতর। —ফাইল চিত্র।
নিজাম প্যালেসের সিবিআই দফতরে গেলেন ইডির ডেপুটি ডিরেক্টর গৌরব ভারিল। গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে গিয়ে সন্দেশখালিতে ‘আক্রান্ত’ হয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। এই হামলায় অভিযোগের আঙুল উঠেছিল শাহজাহান শেখের বাহিনীর বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির তরফে মূল অভিযোগকারী ছিলেন ইডির এই শীর্ষ পদাধিকারী।
সন্দেশখালির ঘটনার তদন্তে রাজ্য পুলিশ গৌরবের বয়ান নথিভুক্ত করতে কলকাতায় ইডির দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়েছিল। কিন্তু তিনি জানান যে ব্যস্ত রয়েছেন। তাঁকে দু’বার তলব করেছিল সিআইডি-ও। সেই গৌরবই বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতার সিবিআই দফতরে গেলেন। ঘটনাচক্রে, আদালতের নির্দেশে সন্দেশখালির ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। দু’দিনের টালবাহানার পরে বুধবার সন্ধ্যাতেই শাহজাহানকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে গিয়েছে সিবিআই। ৫৫ দিন ধরে ‘নিখোঁজ’ থাকা নেতার বর্তমান বাসস্থান কলকাতার সিবিআই দফতর। এই আবহে সন্দেশখালির ঘটনার অভিযোগকারী তথা ইডির ডেপুটি ডিরেক্টরের সিবিআই দফতরে যাওয়া তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
কলকাতা হাই কোর্ট মঙ্গলবার দুপুর ৩টে নাগাদ সন্দেশখালিকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। ওই নির্দেশে বলা হয়েছিল, শাহজাহানকে বিকেল সাড়ে ৪টের মধ্যে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে হবে। এর পর মঙ্গলবার সাড়ে ৩টেতেই রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। শীর্ষ আদালত জানায়, জরুরি বিষয় উপস্থাপন করার জন্য আদালতের যে নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে, তা মেনে মামলা করতে হবে। এই মাঝের সময়ে সিবিআই আধিকারিকেরা ভবানী ভবনের সামনে শাহজাহানকে নিয়ে যাওয়ার জন্য উপস্থিত হন। তাঁদের জানানো হয়, হাই কোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করছে রাজ্য সরকার। তাই ওই নির্দেশ তৎক্ষণাৎ কার্যকর করা যাচ্ছে না।
সিআইডি জানায়, আইনজীবী সিঙ্ঘভি ওই দিন রাত দেড়টায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে নির্ধারিত নিয়ম মেনে মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টে। এর পর বুধবার ইডি কলকাতা হাই কোর্টে রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করে। বেলা ১টার সময়ে ওই মামলার শুনানির সময় নির্দিষ্ট করা হয়। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের মামলাটির নিষ্পত্তি হয়নি জেনেও কলকাতা হাই কোর্ট ইডির মামলার প্রেক্ষিতে শাহজাহানকে বিকেল ৪টে ১৫-র মধ্যে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। আদালতের সেই নির্দেশকে সম্মান জানায় সিআইডি। শাহজাহানকে তুলে দেওয়া হয় সিবিআইয়ের হাতে।