‘কনভারসেশনস ২৪’
স্মার্টফোনের দৌলতে গোটা বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। সেই নেশাতেই বুঁদ আট থেকে আশি। তবে এই নেশা সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের উপরে। স্মার্টফোনের হাত ধরে সমাজমাধ্যমে অতিরিক্ত সময় কাটানোর জেরে পড়াশোনার প্রতি তাদের মনোযোগ অনেকাংশে বিঘ্নিত হচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে স্ক্রিন ব্যবহারে সময়, যা শারীরিক ক্ষতি ডেকে আনছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক অস্থিরতার প্রভাবও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে চিন্তা বাড়ছে অভিভাবকদের। অনুষ্ঠানে টাইটেল স্পনসরের ভূমিকায় ছিল এসআইপি অ্যাবাকাস এবং অ্যাথলিট পিই। পাওয়ার্ড বাই স্পনসরের ভূমিকায় ছিল অ্যামিটি ইন্টারন্যাশনাল এবং বিড়লা হয় স্কুল, মুকুন্দপুর। পাশাপাশি নলেজ পার্টনারের হিসাবে ছিল সুভাষ বোস ইনস্টিটিউট অফ হোটেল ম্যানেজমেন্ট।
সমাজমাধ্যমের প্রতি এই অতিরিক্ত আগ্রহ পড়াশোনার ক্ষতির সঙ্গে সঙ্গে পড়ুয়াদের ভীষণ ভাবে অমনোযোগীও করে তুলছে। এ বিষয়ে সচেতনতার লক্ষ্যেই শিক্ষা জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের নিয়ে admissiontree.in-এর উদ্যোগে আয়োজিত হল ‘কনভারসেশনস ২৪’। গত ৬ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার আইটিসি রয়্যাল বেঙ্গলে এটি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল ‘অ্যাটেনশন ইকনমি - শিক্ষার্থীদের উপর প্রভাব’। প্যানেলিস্টদের মধ্যে ছিলেন দীনেশ ভিক্টর, সঞ্জয় কুমার, জন বাগুল, মুক্তা নয়ন, রণদীপ মৈত্র, অলকানন্দা মুখোপাধ্যায় এবং সুকন্যা সর্বাধিকারীর মতো বিশিষ্ট শিক্ষাবিদেরা। এই আলোচনায় স্পনসরদের মধ্যে ছিলেন ‘এসবিআইএইচএম’-এর ডিরেক্টর বিদিশা সরকার, অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার, বিড়লা হাই স্কুলের সহকারী জেনারেল, বিদ্যা মন্দির সোসাইটি মেজর জেনারেল ভিএন চতুর্বেদী, এসআইপি অ্যাবাকাস-এর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান শুভজিৎ মল্লিক এবং পিই প্রজেক্ট প্রধান, অ্যাথলিট ইন্দ্রাণী সরকার।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের মধ্যে অন্যতম মুক্তা নয়ন ‘অ্যাটেনশন ইকনমি’ সম্পর্কে আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ফিরিয়ে আনতে তাদের প্রত্যেকটি কাজের জন্যে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া প্রয়োজন। যাতে সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করা সম্ভব হয়। সময় ধরে কাজ করা অভ্যাস হয়ে গেলে কিছুটা হলেও শিক্ষার্থীদের মনোযোগী করে তোলা সম্ভবপর হবে।”
এসআইপি অ্যাবাকাস-এর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান শুভজিৎ মল্লিকের কথায়, “শুধু এই বছরই নয়, এসআইপি অ্যাবাকাস আগেও এই অভিনব ইভেন্টের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে। ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের সঠিক দিশা দেখানোর জন্যে এই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। শেখার কোনও বয়স হয় না। তাই শিক্ষার্থীদের সফল কেরিয়ার গড়তে হলে জানার আগ্রহ এবং চাহিদাকে আরও বেশি করে বাড়িয়ে তুলতে হবে।”
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেট তারকা অজয় জাদেজা। আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “‘অ্যাটেনশন ইকনমি’ শব্দটা নতুন হলেও এটার সঙ্গে আমরা সকলেই পরিচিত। কোনও বিষয়ের প্রতি শেখার বা জানার ইচ্ছে থাকলে তবেই মনোযোগী হওয়া সম্ভব, না হলে নয়। আমাদের প্রতিদিনের জীবনে সর্বদাই এই ঘটনা ঘটে চলেছে। জোর করে অ্যাটেনশন পাওয়া বা মনোযোগী করে তোলা শুধু শিক্ষার্থী কেন, কারও ক্ষেত্রেই সম্ভব নয়। বিষয়ের প্রতিও মনোযোগ, অমনোযোগের বিষয় অনেকটা নির্ভর করে।”
তবে শুধু আলোচনাই নয়, পাশাপাশি ছিল সৌরেন্দ্র-সৌম্যজিতের মন ভাল করা কিছু গান। admissiontree.in-এর উদ্যোগে আয়োজিত 'কনভারসেশনস ২৪'-এ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ১৫০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি। সব মিলিয়ে দর্শকদের কাছে অত্যন্ত মনোজ্ঞ ছিল সে দিনের অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানের ডিজিটাল মিডিয়া পার্টনার আনন্দবাজার অনলাইন।