প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের বাকি আর ঠিক পাঁচ দিন। তার আগে আবার পঞ্চায়েতে ভোটের দফা বৃদ্ধির দাবিতে মামলা হল কলকাতা হাই কোর্টে। সোমবার এ বিষয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বহরমপুরের সাংসদ তথা কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। হাই কোর্টে অধীরের আইনজীবী বেশ কয়েকটি কারণ তুলে ধরে জানিয়েছেন, কেন পঞ্চায়েত ভোটে দফা বৃদ্ধি করা জরুরি। হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ মামলাটি শোনা হবে বলেও জানিয়েছে।
এর আগে এই একই দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। আইএসএফ নেতা নওশাদের যুক্তি ছিল, হয় পঞ্চায়েত ভোটে আদালতের নির্দেশ মতো পর্যাপ্ত বাহিনী আনা হোক অথবা পঞ্চায়েত ভোটের দফা বৃদ্ধি করা হোক। আদালতের নির্দেশিত ‘২০১৩ সালের মতো বাহিনী’-র কথা মনে করিয়ে দিয়ে নওশাদ কারণ দেখিয়েছিলেন, রাজ্যে গত দশ বছরে জেলার সংখ্যা বেড়েছে, ভোটার এবং বুথের সংখ্যাও বেড়েছে। তাই পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী না দেওয়া হলে ভোটও ২০১৩ সালের মতোই কয়েক দফায় করানো উচিত। নওশাদ বলেছিলেন, ভোটারদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই তাঁর এই প্রস্তাব। সোমবার অধীরের আইনজীবীও কিছুটা একই কথা বলেছেন। তবে তিনি নিরাপত্তা সংক্রান্ত ‘বিপন্নতা’র বিষয়টি আরও নির্দিষ্ট করে জানিয়েছেন।
অধীরের আইনজীবী মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় হাই কোর্টে বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রতি দিনই অশান্তির ঘটনা ঘটছে। গুলি চলছে। পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী নেই। ফলে তৃণমূল স্তরে বাহিনী পৌঁছতে পারছে না। তাই যদি এই বাহিনী দিয়েই ভোট করাতে হয়, তবে একাধিক দফাতে ভোটগ্রহণ হোক।’’ সোমবার অধীরের পাশাপাশি এই একই কথা বলে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চও। প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি গ্রহণ করেছে। মঙ্গলবারই এই মামলার শুনানি হতে পারে। যদিও মঙ্গলবার এই মামলায় দফা বৃদ্ধির আর্জি গৃহীত হলে চার দিনের মধ্যে পঞ্চায়েত ভোটের দফা বৃদ্ধি কী ভাবে হবে, সে ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত ভোট পিছিয়ে যাবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোটে মোট ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে আবেদন করেছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে কেন্দ্রের তরফে শুধু মাত্র ৩৩৭ কোম্পানি বাহিনী পাঠানো হয়। বাকি ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনী নিয়ে নতুন কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি কেন্দ্র। যে ৩৩৭ কোম্পানি বাহিনী পাঠানো হয়েছিল, তা-ই চূড়ান্ত ধরে নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে কমিশন। এ ব্যাপারে আগেই আপত্তি জানিয়ে দফা বৃদ্ধির কথা বলেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এ বার অন্য বিরোধীরাও একই দাবি তুললেন। তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আপত্তি জানিয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, পঞ্চায়েত ভোটে দফা বাড়বে কি? আদালতে অবশ্য কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল আগেই জানিয়েছিলেন, ২০১৩ সালে যে প্রক্রিয়ায় ভোট গ্রহণ হয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গে এ বারও সেই প্রক্রিয়ায় ভোট হলেই ভাল হয়।