রাজধানীতে থেকেই কংগ্রেসকে সমন্বয়ের বার্তা পাঠালেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
দীর্ঘ দিন পর কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে হাজির হলেন তৃণমূলের কোনও প্রতিনিধি। বুধবার দিল্লিতে কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে হাজির হয়েছিলেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমের কোনও প্রশ্নের জবাব দিতে চাননি উত্তর কলকাতার এই প্রবীণ সাংসদ। তবে অনেকে মনে করছেন, এই বৈঠকে যোগদান জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই, জাতীয় রাজনীতিতে দীর্ঘ দিন ধরেই কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রক্ষা করে চলেছে মমতার দল। তাই ২০২২ সালের শীতকালীন অধিবেশনের আগে আবারও পরস্পরের কাছাকাছি আসাকে বিশেষ ইঙ্গিতপূর্ণ বিষয় হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
বুধবার দিল্লিতে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে সংসদে কক্ষ সমন্বয় নিয়ে মমতা নাম না করে কংগ্রেসকে বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের দল গঠনমূলক রাজনীতি করেই সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে চলবে। যেমন আক্রমণ থাকবে, তেমনই ঠান্ডা মাথা নিয়েও চলবে।’’ এর পরেই মমতা আরও বলেন, ‘‘সব বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই আমরা সমন্বয় করে চলব। যদি তাঁরা আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করতে চান। যদি তাঁরা সমন্বয় করে আমাদের সঙ্গে এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চান।’’
অনেকের মতে, মমতা নাম না করে এই বার্তা কংগ্রেস নেতৃত্বকেই দিতে চেয়েছেন। সেই কারণেই বুধবার কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে নিজের প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন। তবে অন্য অংশের কথায়, মুখে সংসদে বিরোধী ঐক্যের কথা বললেও, বাইরে বিরোধী শক্তি বিভাজনের কাজ করছে তৃণমূল। তাই মৌখিক বার্তাকে কোনও ভাবেই রাজনৈতিক সমন্বয় হিসাবে দেখছে না কংগ্রেস হাইকমান্ড। কারণ, বুধবারই দিল্লিতে ত্রিপুরা কংগ্রেসের ৫ জন নেতাকে তৃণমূলে যোগদান করানো হয়েছে। তাই তৃণমূল নেতৃত্বের কথায় ও কাজে মিল থাকছে না বলেই অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘এমনটা চলতে থাকলে কেন্দ্রে বিরোধীদের লড়াইয়ে যে সমন্বয়ের কথা মমতা বলছেন, তার প্রাথমিক শর্তই ভঙ্গ হয়। তাই বিজেপি বা কেন্দ্রীয় সরকার-বিরোধী লড়াইয়ে নিজের মতামত স্পষ্ট করে মমতা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কংগ্রেস ভাঙা বন্ধ করুন। তবেই কংগ্রেসের সঙ্গে লোকসভা, রাজ্যসভায় কংগ্রেসর কক্ষ সমন্বয়ের পথ মসৃণ হবে।’’