(বাঁ দিকে) জীবন সাহা। মাহে আলম (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
দ্বন্দ্ব যে রয়েছে, তার আভাস আগেই মিলেছিল। এ বার তা প্রকাশ্যেও চলে এল। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিনে মুক্ত তৃণমূল বিধায়কের কাছ থেকে উপহার ফেরত চেয়ে বসলেন মুর্শিদাবাদেরই আর এক তৃণমূল নেতা! শুধু তা-ই নয়, বিধায়ককে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। দুই নেতার মধ্যে ফোনে কথোপকথনের সেই অডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই শাসকদলের অন্দরে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। (আনন্দবাজার অনলাইন সেই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি।) তবে অডিয়োর দুই কণ্ঠস্বর যে তাঁদেরই, তা দু’জনের কেউই অস্বীকার করেননি।
তৃণমূল সূত্রে খবর, গত বিধানসভা ভোটের সময় জীবনকে একটি কম্পিউটার ও একটি প্রিন্টার উপহার হিসাবে দিয়েছিলেন বড়ঞা (উত্তর) ব্লক তৃণমূলের সহ-সভাপতি তথা বড়ঞা পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা মাহে আলম। দ্বন্দ্বের আবহে সেই উপহারই ফেরত চেয়েছেন তিনি। প্রকাশ্যে আসা অডিয়োয় শোনা গিয়েছে, মাহে উপহার ফেরত চাওয়ার পর জীবন বলেন, ‘‘দানের জিনিস কেউ ফেরত নেয় নাকি!’’ পাল্টা মাহে জানান, জীবনের সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখতে চান না তিনি। উত্তরে বিধায়ক জানান, প্রিন্টারটি তাঁর কাছে নেই। তার দাম হিসাবে তিনি ১৫ হাজার টাকা দিতেও রাজি। এর পরেই অডিয়োয় হুমকির সুরে মাহেকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমার বিরুদ্ধে কোথাও অভিযোগ করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তোমার বিরুদ্ধেও অভিযোগ হবে।’’
তৃণমূল সূ্ত্রে জানা যায়, জীবন এবং মাহের রাজনৈতিক জীবন একসঙ্গেই শুরু হয়েছিল। এক সময় বড়ঞায় দলের দুই স্তম্ভ ছিলেন দু’জনে। গত বিধানসভা ভোটেও দু’জনের সম্পর্ক মসৃণ ছিল। কিন্তু তার পর থেকেই দ্বন্দ্ব শুরু হয়। মাহের নামে নানা জায়গায় অভিযোগও করেছেন জীবন। পাল্টা অভিযোগ মাহেও করেছেন। সেই আবহেই প্রকাশ্যে এল এই অডিয়ো।
জীবন বলেন, ‘‘ফোনে হুমকিও দিয়েছেন মাহে আলম। বড়ঞাতে অবৈধ বালির ঘাট-মালিকদের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার জন্যই আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আমি কী ভাবে টিকিট পাই এবং কী করে বাড়ি থেকে বার হই, এ সব কথা বলে মাহে আলম আমাকে হুমকি দিয়েছেন। গোটা বিষয়টি ইতিমধ্যে দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছি।’’
পাল্টা মাহে বলেন, ‘‘বিধায়ক দুর্নীতিগ্রস্ত। এ সব লোককে আগামী দিনে বড়ঞার মানুষ উত্তর দেবেন।’’