যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যপাল তথা আচার্য সি ভি আনন্দ বোসের উপস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তার আবহেই আজ, মঙ্গলবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। যাদবপুর কর্তৃপক্ষ ওপেন এয়ার থিয়েটারে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের কথা সোমবার ঘোষণা করেন। এ দিনই এক্স হ্যান্ডলে ও চিঠি দিয়ে রাজভবনের তরফে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ধারার খুঁটিনাটি তুলে ধরে অন্তর্বর্তী উপাচার্যের আচরণ আইন ও বিধির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে মন্তব্য করা হয়েছে। এমনকি, বেআইনি কাজ ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের ডিগ্রির বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হয়েছে।
এক্স হ্যান্ডলে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর একটি পোস্ট আবার সমাবর্তন ঘিরে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দেয়। ফলে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগে রাজ্যপালের দেরির অভিযোগের পাশাপাশি যাদবপুরের সমাবর্তন ঘিরেও নতুন করে নবান্ন-রাজভবনের সম্পর্কেই টানাপড়েন শুরু হল বলে মনে করা হচ্ছে। তবে রাজ্যপাল আসবেন না বলেও খোলসা করেনি রাজভবন।
ব্রাত্য এ দিন এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘যাদবপুরের সমাবর্তন দীর্ঘদিন ধরে ২৪ ডিসেম্বর হচ্ছে এবং তা আবশ্যিক একটি অনুষ্ঠান। যাদবপুরের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের রীতি, ঐতিহ্য নিয়ে ছেলেখেলা চলে না। সমাবর্তনে যত দূর সম্ভব আইনি পদ্ধতি মেনে চলা হয়েছে। ছাত্রস্বার্থের সঙ্গে জড়িত কিছু অনির্দিষ্ট কাল ধরে স্থগিত রাখা যায় না।’ রাজভবনের তরফে যাদবপুরের যে আইনি ত্রুটির কথা বলা হয়েছে, তা-ও ধোপে টেকে না বলে মত যাদবপুরের কর্তাব্যক্তিদের একাংশের। অন্তর্বর্তী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “রাজভবনের তরফে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ৬৭ (১) নম্বর ধারায় কোর্টের বৈঠক ডাকা নিয়ে বিধির কথা তুলে ধরা হয়েছে। তাতেই স্পষ্ট, উপাচার্যের তরফে ১৫ দিন আগে নোটিস দেওয়ার কথা বলা হলেও ক্ষেত্র বিশেষে ওই সময়সীমা কমিয়ে আনার অধিকারও তাঁর রয়েছে। কর্মসমিতির বা কোর্টের বৈঠক ডাকতে অন্তর্বর্তী উপাচার্যের তাড়াহুড়োর অভিযোগ ধোপে টেকে না।”
রাজভবনের তরফে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে এ-দিন রাত পর্যন্ত একাধিক চিঠিতে কার্যত আইন লঙ্ঘনের কথা বলা হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হতে চলেছে, তা-ও স্মরণ করানো হয়। তবে যাদবপুরের সূত্র বলছে, রাজভবনের তরফে শেষ মুহূর্তে সমাবর্তন আয়োজনের কথা বলার যে দাবি করা হচ্ছে, তা ধোপে টেকে না। অনেক আগেই সমাবর্তনের অতিথির বিষয়টি ঠিক করার বৈঠকে রাজ্যপালের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। জুটার বিবৃতিতেও সমাবর্তন নিয়ে টালবাহানা সমর্থনযোগ্য নয় জানিয়ে অনুষ্ঠান সুসম্পন্ন করতে নিজেদের দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করার কথা বলা হয়েছে। রাজ্যপাল তথা আচার্যের সই এখনও না-মেলায় ডক্টরেট অব সায়েন্স-এর একটি শংসাপত্র প্রদান নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। বাকি শংসাপত্রে শুধু উপাচার্যের সই থাকলেও চলে, খবর সূত্রের।