শনিবার দিল্লিতে নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগদান করেও, বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।
নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগদান করতে দিল্লি গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধী শিবিরের একমাত্র প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত হলেও, বলার সময় বার বার বাধাদান এবং পরে মাইক বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন তিনি। আর এ বার সেই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিধানসভার অধিবেশনে প্রতিবাদের ঝড় তুলতে চাইছে তৃণমূল পরিষদীয় দল। বিধানসভা সূত্রে খবর, ওই ঘটনার প্রতিবাদে নিন্দা আলোচনার ভাবনা রয়েছে শাসকপক্ষের।
সোমবার অধিবেশনের শুরুতেই হবে প্রশ্নোত্তরপর্ব। প্রশ্নোত্তরপর্ব শেষ হলে দৃষ্টি আকর্ষণী পর্ব ও মুলতুবি প্রস্তাব আনার সুযোগ থাকছে তৃণমূল ও বিজেপি বিধায়কদের কাছে। মনে করা হচ্ছে, সেই সময়েই এই নিন্দা আলোচনার দাবিতে সরব হতে পারে তৃণমূল পরিষদীয় দল।
তৃণমূল পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষ সেই ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ‘‘দিল্লিতে নীতি আয়োগের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আমরা সকলে প্রতিবাদ জানাব। বিধানসভাতেও আমরা এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।’’ একই মত প্রকাশ করেছেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তবে কী পদ্ধতিতে তৃণমূল এই নিন্দা আলোচনার বিষয়টি উত্থাপন করবে সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি। আর এই আলোচনায় যে বাংলার শাসকদলের নিশানা হবে বিজেপি, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। তাই মনে করা হচ্ছে বিজেপিকে এই ইস্যুতে আক্রমণ করা হলে জবাব দিতে পারে তারাও। তাই সোমবারের অধিবেশন উত্তপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
শনিবার নীতি আয়োগের বৈঠক থেকে ‘ওয়াক আউট’ করে বেরিয়ে আসার পর দিল্লিতেই দাঁড়িয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন মমতা। বিকেলে কলকাতায় ফিরে আবারও তোপ দাগেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, ‘‘বৈঠক বয়কট করে ঠিক করেছি। বাংলার সম্মান মাথা নত করতে দিইনি।’’ পাল্টা মমতার বক্তব্য যেমন খারিজ করেছে প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো(পিআইবি), তেমন উড়িয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও। এ প্রসঙ্গে নির্মলা বলেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। আমরা সকলে তাঁর কথা শুনেছি। প্রত্যেক মুখ্যমন্ত্রীকে নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের সামনের টেবিলে সেই সময় দেখাও যাচ্ছিল। প্রত্যেক মুখ্যমন্ত্রীকে সমান সময় দেওয়া হয়েছিল। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এমন অসত্য দাবি করছেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক। ওঁর সত্যিটা বলা উচিত।’’ এমন বিবৃতি পাল্টা বিবৃতি নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে অধিবেশনের উত্তাপ বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।