(বাঁ দিকে) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে ২০০৩ সালে কী কী অনিয়ম হয়েছে, সেই হিসাব চাওয়া হচ্ছে তাঁর সরকারের কাছে। কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের রিপোর্ট (সিএজি রিপোর্ট)-এর বিরোধিতা করে এমনটাই জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার রেড রোডের ধর্না মঞ্চ থেকে সিএজি রিপোর্টের সমালোচনা করেন মমতা। তিনি জানান, ওই রিপোর্টের বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘কড়া চিঠি’ও লিখেছেন। সেই চিঠির অংশ ধর্না মঞ্চে পড়েও শোনান মমতা।
বুধবার দিল্লিতে দলের সদর কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও সর্বভারতীয় মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া। তাঁদের দাবি, সিএজি রিপোর্টের ছত্রে ছত্রে বাংলার আর্থিক দুর্নীতির উল্লেখ রয়েছে। সুকান্ত জানান, প্রায় দু’লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে রাজ্যের বিরুদ্ধে। তার আগে লোকসভায় খোদ প্রধানমন্ত্রীকে বাংলার বকেয়া টাকা নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বলেছিলেন, ‘‘সিএজি রিপোর্টটি আমি এখন পড়ছি। আপনারাও দেখে নিন।’’
শুক্রবার সেই রিপোর্টেরই নিন্দা করলেন মমতা। তিনি জানান, কেন্দ্র ওই রিপোর্টে রাজ্যের কাছ থেকে এমন সময় কালের হিসাব চেয়েছে, যখন তৃণমূল ছিল ‘শিশু’। মমতা বলেন, ‘‘আমার কাছ থেকে ওরা ২০০৩ সালের রিপোর্ট চাইছে। তৃণমূল তখন ‘বেবি’! মাত্র পাঁচ বছর বয়স দলটার। সে সময়ে কী হয়েছে, আমি তার হিসাব দেব? আমি তার দায়িত্ব নেব? অভিষেকের কাছ থেকে এমন হিসাব ওরা চাইছে, যখন ও জন্মায়নি।’’ কেন্দ্রের কাছ থেকে আসা টাকা খরচের হিসাব বা ব্যবহারিক শংসাপত্র (ইউসি) কেন্দ্রকে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সব হিসাব দিয়েছি। তৃণমূল চোর? তা হলে তোমরা কী? কেন্দ্র তো সব বিভাগেই ৩০ শতাংশ কমিশন খায়। আমি কড়া চিঠি দিয়েছি প্রধানমন্ত্রীকে।’’
কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে এবং বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য শুক্রবার থেকে রেড রোডে ৪৮ ঘণ্টার জন্য ধর্নায় বসেছেন মমতা। শনিবার পর্যন্ত তাঁর ধর্না চলবে। তার পর সেই কর্মসূচি চালাবেন তৃণমূলের অন্যান্যেরা। এর আগেও সিএজি রিপোর্ট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মমতা। চলতি সপ্তাহেই নদিয়ার কৃষ্ণনগরে গিয়ে মমতা ওই রিপোর্টের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘সিএজি রিপোর্ট লোকসভায় অডিট হয়। বিধানসভার কমিটি সিএজি রিপোর্ট দেখে। পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি) প্রতিটি রিপোর্ট দেখে। যারা পিএসির সদস্য, তাঁদের জিজ্ঞাসা করুন কত লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা, গরিবের টাকা দিয়ে ধনসম্পত্তি বানিয়েছে। আগে সেটার উত্তর দিক।’’