মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
দু’দেশের সম্পর্কে স্পর্শকাতরতার আবহেই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্দি বিনিময়ের ছায়া পড়ল গঙ্গাসাগর মেলার প্রাঙ্গণেও। আর ক’দিন পরে বচ্ছরকার মেলা শুরু। তার আগেই বাংলাদেশে আটক কাকদ্বীপের বাসিন্দা ভারতীয় মৎস্যজীবীদের মুক্তির খবরে খুশির আবহ। রবিবার হলদিয়ার কাছে আন্তর্জাতিক জল সীমানায় দু’দেশের মধ্যে ১৮৫ জন বন্দী মৎস্যজীবীর বিনিময় হয়েছে। আজ, সোমবার গঙ্গাসাগরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশ থেকে মুক্তি পাওয়া মৎস্যজীবীদের স্বাগত জানাবেন বলে খবর। এ দিন তারই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে গঙ্গাসাগরে।
আগামী ৯ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) কলকাতার আউটরাম ঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই মেলার উদ্বোধন হওয়ার কথা। তার আগে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী গঙ্গাসাগরে মেলার প্রস্তুতিপর্ব দেখতে আসছেন। সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আসার আগে আলোয় সেজেছে গঙ্গাসাগর। সোমবার দক্ষিণ ২৪ জেলা জুড়ে একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন তিনি। ফিরে আসা মৎস্যজীবীদের সঙ্গে দেখাও করবেন।’’
বাহারি রঙিন আলোয় সেজে উঠেছে কপিল মুনির মন্দির-সহ কাকদ্বীপের লট ৮, কচুবেড়িয়া ঘাট, চেমাগুড়ি, নামখানার নারায়ণপুর ঘাট এবং গোটা মেলা চত্বর। এ দিন দুপুরে গঙ্গাসাগরের হেলিপ্যাডে হেলিকপ্টারের মহড়া হয়। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, দুপুরে গঙ্গাসাগরে পৌঁছে প্রথমে কপিল মুনি মন্দিরে পুজো দিতে যাবেন। ভারতসেবাশ্রম সঙ্ঘেও যাবেন মমতা। সেখান থেকে সভায়।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বেলা একটা নাগাদ আকাশপথে মেলা প্রাঙ্গণে এসে মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে মুক্তি পাওয়া ৯৫ জন মৎস্যজীবীর সঙ্গে কথা বলবেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের হাতে আর্থিক সাহায্য এবং উপহার তুলে দেবেন বলেও খবর।
এ দিন বিকেলে বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় উপকূল রক্ষী বাহিনীর হাতে ৯৫ জন মৎস্যজীবী এবং ছ’টি মাছ ধরার ট্রলার তুলে দিয়েছে। এই ছ’টি ট্রলার-সহ ৯৬ জন গত অক্টোবরে মাছ ধরতে গিয়ে আন্তর্জাতিক জল সীমানা অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছিলেন। বাংলাদেশের উপকূল রক্ষী বাহিনী তখন তাঁদের আটক করে। এক মৎস্যজীবী প্রাণ বাঁচতে জলে ঝাঁপ দিলে তাঁর মৃত্যু হয়। বাকি মৎস্যজীবীরা উপকূল রক্ষীর হাতে বন্দি হন। তাঁরা সবাই কাকদ্বীপের বাসিন্দা বলেই জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত কাকদ্বীপের বন্দিদের মুক্ত করতে রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলে আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ।
এ দিকে, মকর সংক্রান্তির মেলার জন্য পুণ্যার্থীরা গঙ্গাসাগরে আসা শুরু করে দিয়েছেন। মেলা প্রাঙ্গণে মেগা কন্ট্রোলরুম এখনই তৈরি। জেলা প্রশাসন জানাচ্ছে, ১৪ জানুয়ারি সকাল থেকে ১৫ জানুয়ারি সকাল পর্যন্ত পুণ্যস্নান হবে। মেলাকে যথাসম্ভব প্লাস্টিকমুক্ত রাখতে ‘বোতল ক্রাশার ইউনিট’ খোলা হচ্ছে। সরবরাহ করা হবে পাটের ব্যাগ। পূণ্যার্থীরা মেলা প্রাঙ্গণে এলেই তাঁদের মোবাইল ফোনে স্নানের জায়গা-সহ দরকারি সব কিছুর হদিস পৌঁছতে শুরু করবে।