সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী এ বারের সফরে বীরভূম জেলায় জোড়া সভা করতে পারেন। একটি প্রশাসনিক সভার পাশাপাশি একটি রাজনৈতিক সভাও করতে চাইছেন তিনি। — ফাইল চিত্র।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সফর থেকে ফিরেই বীরভূমে যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে সম্প্রতি খবর মিলেছে। সব পরিকল্পনা অনুযায়ী চললে আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকেই তাঁর বীরভূম যাওয়ার কথা। প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারি মাসেই বীরভূম সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সফরের দু’মাসের মধ্যেই আবারও বীরভূমের মাটিতে পা রাখবেন তিনি। যা থেকে অনুব্রত মণ্ডল-হীন বীরভূমকে জেলা হিসেবে মমতা বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন, তা স্পষ্ট।
সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী এ বারের সফরে বীরভূম জেলায় জোড়া সভা করতে পারেন। একটি প্রশাসনিক সভার পাশাপাশি মমতা একটি রাজনৈতিক সভাও করতে চাইছেন। জেলা প্রশাসনকে সেই মর্মে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নবান্ন থেকে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দিষ্ট কর্মসূচি প্রসঙ্গে এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি। পূর্ব মেদিনীপুর সফর সেরে মুখ্যমন্ত্রী কলকাতায় ফিরলে তাঁর বীরভূমের চূড়ান্ত কর্মসূচি স্থির করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
গত বছর ১১ অগস্ট বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর সেখানকার সংগঠন দেখার দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলা সভাপতির অনুপস্থিতির ‘প্রভাব’ যাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে না পড়ে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রয়েছে মমতার। তাই ফেব্রুয়ারি মাসে বোলপুর গিয়ে বীরভূম জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন দলের সর্বময় নেত্রী। পাশাপাশি, গত ২৪ মার্চ কালীঘাটের বাসভবনে একটি বৈঠক করে বীরভূমের সংগঠন পরিচালনার জন্য একটি কোর কমিটি গঠন করেছেন মমতা। রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, মলয় ঘটক এবং পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন চক্রবর্তীকে বীরভূমের সংগঠন দেখভাল করার দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তার পরেও বীরভূমের রাশ নিজের হাত থেকে একেবারে আলগা করতে চাইছেন না মমতা। বীরভূমের সংগঠন নিয়ে কোনও ঢিলেমি চান না তিনি। পঞ্চায়েত ভোটের পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনেও বীরভূমের দু’টি আসন যাতে ধরে রাখা যায়, সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করতে চান তৃণমূল নেত্রী। ২০১৪ সাল থেকে বীরভূমের দু’টি লোকসভা আসনই তৃণমূলের দখলে রয়েছে।
সোমবার বীরভূম জেলা তৃণমূলের এক নেতা জানিয়েছেন, দলনেত্রী যে জেলায় আসছেন, সে কথা তাঁদের জানানো হয়েছে। তবে তাঁর পূর্ণাঙ্গ সফরসূচি এখনও জেলার নেতৃত্বের হাতে আসেনি। বলা হয়েছে, চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে মুখ্যমন্ত্রীর সফরসূচি দলের নেতাদের জানানো হবে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে যখন মুখ্যমন্ত্রী বীরভূম এসেছিলেন, সেই সময় জেলবন্দি হলেও অনুব্রত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গেই। তখন আসানসোল জেলে বন্দি ছিলেন তিনি। কিন্তু গত মার্চ মাসে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দিল্লির তিহাড় জেলে। তার পর থেকে অনুব্রতের কন্যা সুকন্যাকে নিয়ে চিন্তিত মুখ্যমন্ত্রী। দলের নেতাদের তিনি দায়িত্ব দিয়েছিলেন সুকন্যার খোঁজখবর রাখতে। অনুব্রত জেলে যাওয়ার পর থেকে তাঁদের সঙ্গে আর কেউ যোগাযোগ রাখছেন না বলে সুকন্যা সম্প্রতি ক্ষওভ প্রকাশ করেছেন। তাই অনেকের ধারনা, বীরভূম সফরে গেলে অনুব্রত-কন্যা সুকন্যার সঙ্গেও দেখা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।