রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের বিরুদ্ধে কয়লা পাচার মামলায় প্রমাণ রয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছি সিবিআই। ফাইল চিত্র।
কয়লা পাচার মামলায় রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে তাঁর ডালহৌসির সরকারি বাসভবনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই, এমনটাই দাবি সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর।
বুধবার সকাল থেকেই আসানসোল এবং কলকাতায় মলয়ের পাঁচটি বাড়িতে তল্লাশি অভিযান শুরু করে সিবিআই। তল্লাশি চালানো হয় আলিপুর এলাকায় মন্ত্রীর এক ঘনিষ্ঠের বাড়িতেও। পরে রাজভবনের পাশে ডালহৌসি চত্বরে মন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে গিয়ে তাঁকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা জিজ্ঞাসাবাদ করেন বলে জানানো হয়েছে সংবাদ সংস্থার তরফে।
সিবিআইয়ের সূত্রের উল্লেখ করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, মলয়ের বিরুদ্ধে কয়লা পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে কিছু প্রমাণ এসেছে। সংবাদ সংস্থাকে সিবিআইয়ের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মন্ত্রীকে ওঁর সরকারি বাসভবনে জিজ্ঞাসাবাদ করছি আমরা। কিছু নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
বুধবার যখন মলয়কে তাঁর সরকারি বাসভবনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তখন তাঁর লেক গার্ডেন্সের বাড়িতেও পৌঁছে যায় সিবিআইয়ের আরেকটি দল। কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘিরে ফেলে মন্ত্রীর কলকাতার দুই বাড়ির চারপাশ। অন্যদিকে আসানসোলের বাড়িতেও তল্লাশি চলাকালীন মলয়ের পরিবারের সদস্যদের থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়, তাঁদের একটি ঘরে বসিয়ে বাড়ির অন্যান্য অংশে তল্লাশি চালানো হয় বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা। পরে সিবিআইয়ের এক আধিকারিক পিটিআইকে বলেন, ‘‘কয়লা পাচারের তদন্তে মন্ত্রীর নাম উঠে এসেছে। এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কিছু নথিপত্রের খোঁজ করা হচ্ছে। আমরা খতিয়ে দেখছি, এ ব্যাপারে মন্ত্রীর ভূমিকা কী ছিল।’’
বুধবার আসানসোলে মলয়ের তিনটি এবং কলকাতার দুটি বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। কয়লা পাচার মামলায় এই তল্লাশি বলে খবর। বুধবার সকাল থেকেই আসানসোলের একাধিক জায়গায় যায় সিবিআইয়ের দল। তবে আসানসোলে মলয়ের আপকার গার্ডেনের বাড়িতে সিবিআই হানা দেওয়ার অব্যবহিত পর সেখানে পৌঁছে যান মন্ত্রীর অনুগামীরা। শুরু হয়ে য়ায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান।
প্রথমে ‘মলয় ঘটক জিন্দাবাদ’ স্লোগান তোলেন তাঁর অনুগামীরা। তার পর ‘নরেন্দ্র মোদী হায় হায়’, ‘সিবিআই-ইডি দূর হঠো’ বলে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় সংস্থাকে বিজেপির দালাল বলে কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেতা কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, যে বিজেপি নেতারা দুর্নীতিগ্রস্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করছে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এক মলয়-অনুগামীর কথায়,‘‘বিজেপি নেতাদের বাড়িতে কেন সিবিআই, ইডি যায় না? কেন শুভেন্দু অধিকারীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না?’’
উল্লখ্য, সম্প্রতি কয়লা পাচার মামলায় অতি সক্রিয় হয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। গত শুক্রবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। এর আগে এই মামলাতেই মলয়কে ইডি নোটিস পাঠিয়েছিল। আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ইডির তলব পেয়ে এক বার দিল্লিতে গিয়েছেনও। তবে তার পর ইডির অনেকগুলি নোটিস পেয়েও সাড়া দেননি মলয়।