অভিষেকের মেয়ের হাত ধরে ‘শান্তিনিকেতন’ থেকে বেরিয়ে আসছেন মমতা।
কয়লা-কাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেরা হতে চলেছে আর কিছু ক্ষণের মধ্যেই। আজ, মঙ্গলবার দেখা করবেন বলে সোমবারই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিবিআই)-কে জানিয়েছিলেন রুজিরা। সেই মতো সকাল ১১টা বেজে ৩৫ নাগাদ মঙ্গলবার হরিশ মুখার্জি রোডে তাঁদের বাড়ি ‘শান্তিনিকেতন’-এ পৌঁছন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। রুজিরা তাঁদের তদন্তে সবরকম ভাবে সহযোগিতা করছেন বলে জানা গিয়েছে।
সিবিআই ‘শান্তিনিকেতন’-এ ঢোকার মিনিট চারেক আগেই সেখান থেকে বেরোতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। নবান্ন যাওয়ার পথে সেখানে ঢোকেন তিনি। মিনিট দশেক ছিলেন। বেরনোর সময় হাত ধরে গাড়ি পর্যন্ত তাঁকে এগিয়ে দিতে দেখা যায় অভিষেক-কন্যাকে। তাকে ভিতরে পাঠিয়ে গাড়িতে উঠে চলে যান মমতা। তার পরেই সিবিআইয়ের গাড়ি এসে পৌঁছয় সেখানে।
রুজিরাকে জেরা করতে আইনজীবী-সহ ‘শান্তিনিকেতন’-এ সিবিআই আধিকারিক উমেশ কুমার-সহ মোট ৯ জন আধিকারিক রয়েছেন। এর মধ্যে আইনি উপদেষ্টা দল (লিগ্যাল অ্যাডভাইসরি টিম)-এর ৩ আইনজীবী। তাঁদের মধ্যে ২ জন দিল্লির এবং ১ জন কলকাতার। অতিরিক্ত সুপারিনটেন্ডেন্টের নেতৃত্বে সিবিআইয়ের ৬ জন অফিসার থাকার কথা। এর মধ্যে ২ জন মহিলা। রুজিরার বয়ান ভিডিয়ো রেকর্ড করা হবে বলেও সূত্রের খবর।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে রবিবার রুজিরাকে ফৌজদারি আইনের ১৬০ ধারায় নোটিস পাঠায় সিবিআই। ওই দিন সটান ‘শান্তিনিকেতন’-এও হাজির হয় গোয়েন্দাদের একটি দল। কিন্তু সেই সময় রুজিরা বা অভিষেক কেউই বাড়িতে ছিলেন না। তার পর সোমবার নিজে ই-মেলে সিবিআই-কে চিঠি পাঠান রুজিরা। মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে ৩টের মধ্যে দেখা করতে পারবেন বলে জানান।
সিবিআইয়ের অভিযোগ, কয়লা-কাণ্ডে অভিষেকের স্ত্রী-র ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এ ব্যাপারে রুজিরার বয়ান চান তাঁরা। রুজিরার বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ, তা স্পষ্ট ভাবে জানাননি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। বরং রুজিরাকে ‘সাক্ষী’ হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তবে তাঁর সঙ্গে কেন দেখা করতে চাইছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা, তা তাঁর বোধগম্য হচ্ছে না, তবে তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করতে রাজি বলে চিঠিতে জানিয়েছেন রুজিরা।
সম্প্রতি অভিষেকের দায়ের করা একটি মানহানি মামলায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে সমন জারি করে সাংসদ এবং বিধায়কদের জন্য গঠিত বিধাননগরের বিশেষ আদালত। শাহের ঠিকানা ভুল থাকায় পরে যদিও সমন প্রত্যাহার করা হয়, তবে শাহের বিরুদ্ধে সমন জারি হওয়ার পরই রুজিরাকে সিবিআইয়ের নোটিস, এই দুইয়ের মধ্যে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ লুকিয়ে রয়েছে বলে দাবি করছে তৃণমূল।
এরই মধ্যে সোমবার অভিষেকের শ্যালিকা মেনকা গম্ভীরকেও বেশ কয়েক কিছু ক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। রুজিরা এবং মেনকাকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা কার হতে পারে বলেও সূত্রের খবর।