RG Kar Financial Irregularity

সন্দীপরা নিজেদের লাভের উদ্দেশ্যেই আরজি করকে ব্যবহার করেছেন, গড়েছেন আঁতাঁত: সিবিআই

সিবিআই দাবি করেছে, সন্দীপ, বিপ্লব সিংহ, সুমন হাজরা, আফসার আলি খান, আশিসকুমার পাণ্ডে হাসপাতাল থেকে আখের গুছিয়ে নিতে নিজেদের মধ্যে ‘ঘনিষ্ঠ আঁতাঁত’ গড়ে তুলেছিলেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৪ ২০:২৭
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ।

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। — ফাইল চিত্র।

আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় যত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁরা নিজেদের মধ্যে ‘ঘনিষ্ঠ আঁতাঁত’ গড়ে তুলেছিলেন। অনৈতিক ভাবে তাঁরা সরকারের আর্থিক ক্ষতি সাধন করেছেন। পরিবর্তে লাভবান হয়েছেন নিজেরা। ওই মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে এমনটাই দাবি করল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই।

Advertisement

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে সেখানকার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ-সহ পাঁচ জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে সিবিআই। সোমবার আলিপুর আদালতে আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলার শুনানিতে সিবিআই দাবি করেছে, সন্দীপ, বিপ্লব সিংহ, সুমন হাজরা, আফসার আলি খান, আশিসকুমার পাণ্ডে হাসপাতাল থেকে আখের গুছিয়ে নিতে নিজেদের মধ্যে ‘ঘনিষ্ঠ আঁতাঁত’ গড়ে তুলেছিলেন। তাঁদের এই লাভের জন্য আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে রাজ্য। আদালতে ওই পাঁচ জনের জেল হেফাজতের মেয়াদ ১৪ দিন বৃদ্ধি করার আর্জিও জানায় সিবিআই।

আরজি করে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে এনেছিলেন হাসপাতালের প্রাক্তন অতিরিক্ত সুপার আখতার আলি। তিনি এই ঘটনায় ইডি এবং সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করাতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আখতারের অভিযোগপত্রে ১৫টি অনিয়মের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। সেই অভিযোগগুলিই খতিয়ে দেখে সিবিআই। আখতারের অভিযোগ ছিল, সরকারের সম্পত্তি স্বাস্থ্য ভবন এবং কলেজ কাউন্সিলের অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংগঠনকে দেওয়া হয়েছে। ফুড স্টল, ক্যাফে, ক্যান্টিনের মতো জায়গা টেন্ডার না ডেকেই বণ্টন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরবরাহকারীদের কাজের বরাত দেওয়ার বিষয়ে স্বজনপোষণের অভিযোগও তুলেছিলেন আখতার। এ ক্ষেত্রে হাসপাতালে জিনিসপত্র সরবরাহ করেন এমন তিন জনের নাম করেন আখতার। সেই তিন জন হলেন বিপ্লব, সুমন এবং আফসর। আখতার দাবি করেছিলেন, যোগ্যতা না থাকলেও এই তিন জন কোটি কোটি টাকার কাজের বরাত পেয়েছেন। এর ফলে তাঁরা লাভবান হয়েছিলেন বলে আদালতে দাবি করেছে সিবিআই। লাভবান হয়েছেন সন্দীপও। আর সেই লাভ করতেই অভিযুক্তেরা নিজেদের মধ্যে ‘ঘনিষ্ঠ আঁতাত’ তৈরি করেছিলেন বলে দাবি সিবিআইয়ের।


সোমবার আদালতে বিপ্লবের আইনজীবী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আরজি কর হাসপাতাল থেকে এখনও ব্যবসায়িক কাজের জন্য ৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে তাঁর মক্কেলের। সন্দীপের সঙ্গে তাঁর কোনও ঘনিষ্ঠতা থাকলে এত টাকা কী ভাবে বকেয়া রইল? প্রসঙ্গত, বিপ্লবের সংস্থা ‘মা তারা ট্রেডার্স’ আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসার সরঞ্জাম সরবরাহ করত। সুমনের সংস্থাও হাসপাতালে জিনিসপত্র সরবরাহ করত। আফসার হাসপাতালের অ্যাডিশনাল সিকিউরিটির পদে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগ, কখনও তাঁকে নির্দিষ্ট পোশাকে দেখা যায়নি। তিনি সন্দীপের ‘ব্যক্তিগত দেহরক্ষী’ হিসাবেই কাজ করতেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতার ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত ছিলেন। দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছিলেন আশিসও। তাঁর বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছিল।

আরও পড়ুন
Advertisement