(বাঁ দিকে) সন্দীপ ঘোষ এবং বিপ্লব সিংহ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
সোমবার আলিপুর আদালতে আরজি করে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত বিপ্লব সিংহের জামিনের আর্জির শুনানি ছিল। আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, আরজি কর ছাড়াও একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে ‘মা তারা ট্রেডার্স’। এই সংস্থার মালিক বিপ্লব। তদন্তকারী আধিকারিকদের সন্দেহ, বিপ্লব আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ‘ঘনিষ্ঠ’। আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলিও সেই অভিযোগই করেছিলেন। যদিও বিপ্লবের আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেলকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিপ্লবের আইনজীবী আদালতে জানান, আরজি কর হাসপাতাল থেকে এখনও ব্যবসায়িক কাজের জন্য ৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে তাঁর মক্কেলের। সন্দীপের সঙ্গে তাঁর কোনও ঘনিষ্ঠতা থাকলে এত টাকা কী ভাবে বকেয়া রইল? বিপ্লবের সংস্থা যে একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করত, সে কথাও জানিয়েছেন আইনজীবী। তিনি জানান, এসএসকেএম হাসপাতাল, বাঙুর ইন্সটিটিউট অফ নিউরোসায়েন্স, হাওড়া সদর হাসপাতালে নিয়মিত ভাবে ওই সংস্থার ব্যবসায়িক সামগ্রী সরবরাহ করা হত। সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক সামগ্রীর গুণগত মান খারাপ হলে ওই হাসপাতালগুলি থেকেও অভিযোগ আসার কথা ছিল। কিন্তু এমন কোনও অভিযোগ এত দিন আসেনি বলেই জানান বিপ্লবের আইনজীবী।
সিবিআই তদন্তের ইতিমধ্যে ৭২ দিন অতিক্রান্ত। সে কথা আদালতে উল্লেখ করে বিপ্লবের জামিনের আবেদন জানান তিনি। তবে সিবিআইয়ের আইনজীবীর দাবি, তদন্ত এখনও চলছে। এই পর্যায়ে জামিন পেলে অভিযুক্তেরা পালিয়ে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা সিবিআই আইনজীবীর। বিপ্লবের জামিনের আর্জির বিরোধিতা করেন তিনি। আদালতে সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিকও উপস্থিত ছিলেন। তিনি আদালতে জানান, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ না করেই ব্যবসার জন্য বরাত পেতেন বিপ্লব। মামলার শুনানি ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। রায়দান স্থগিত রেখেছে আলিপুর আদালত।
সোমবার মামলার শুনানিতে বিপ্লব ছাড়াও সুমন হাজরা এবং আশিস পাণ্ডের জামিনের আবেদন জানানো হয় আলিপুর আদালতে। আগামী ১২ নভেম্বর তাঁদের জামিনের আবেদনের শুনানি হবে। তার আগে সিবিআইকে লিখিত ভাবে নিজেদের বক্তব্য জমা দিতে হবে আদালতে।
আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে এনেছিলেন হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। তিনিই ইডি ও সিবিআইকে দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করানোর আর্জি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সরকারের টাকার অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। সরবরাহকারীদের কাজের বরাত দেওয়ার বিষয়ে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলেছিলেন আখতার। এ ক্ষেত্রে বিপ্লব, সুমন হাজরা এবং আফসর— তিন জন সরবরাহকারীর নামও উল্লেখ করেছিলেন আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার।