শাহজাহান শেখ। — ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালিকাণ্ড নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, সে কারণে মঙ্গলবার সন্দেশখালির তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা শাহজাহান শেখকে হেফাজতে পায়নি সিবিআই। সন্ধ্যাবেলা ভবানী ভবন থেকে তাঁকে ছাড়াই বেরিয়ে যান আধিকারিকেরা। শাহজাহানের হেফাজত নিয়ে রাজ্য একটি মামলা দায়ের করেছে সুপ্রিম কোর্টে। মামলাটি বিচারাধীন— এই যুক্তিতে পুলিশ সিবিআইয়ের হাতে শাহজাহানকে তুলে দিতে অস্বীকার করে।
শাহজাহানকে হেফাজতে নিতে মঙ্গলবার বিকেলে ভবানী ভবনে পৌঁছয় সিবিআই। সঙ্গে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। যদিও সন্ধ্যায় দেখা যায়, শাহজাহানকে ছাড়াই ভবানী ভবন থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গাড়ি। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছিল, শাহজাহানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। রাজ্য পুলিশের সদর দফতর ভবানী ভবনে পৌঁছন দক্ষিণবঙ্গের এডিজি (অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল) সুপ্রতিম সরকার। তার পরেও কেন শাহজাহানকে ছাড়া সিবিআই আধিকারিকেরা বেরিয়ে গেলেন ভবানী ভবন থেকে, সেই নিয়ে তৈরি হয়েছিল ধোঁয়াশা। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হাই কোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য। সে কারণে শাহজাহানের ‘হেফাজত-বদল’ হয়নি।
মঙ্গলবারই সন্দেশখালি মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টের মধ্যেই ধৃত শাহজাহানকে কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। তার পরেই মঙ্গলবার বিকেলে শাহজাহানকে হেফাজতে নিতে ভবানী ভবনে পৌঁছন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। তদন্তের কাগজপত্রও তাঁদের হাতে নেওয়ার কথা ছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত শাহজাহানকে ছাড়াই বেরিয়ে আসেন সিবিআই আধিকারিকেরা।
সন্দেশখালিকাণ্ডে কলকাতা হাই কোর্টের একক বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) ডিভিশন বেঞ্চে যে আবেদন জানিয়েছিল, তার প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবারের এই নির্দেশ। গত ৫ জানুয়ারি ইডির আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠনের জন্য একক বেঞ্চ যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা খারিজ করেছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি, ন্যাজাট এবং বনগাঁ থানার মোট তিনটি অভিযোগের তদন্তের ভার সিবিআই-কে হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য পুলিশকে। এর মধ্যে গত ৫ জানুয়ারি ইডির বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল ন্যাজাট থানায়।
হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি লড়বেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। শীর্ষ আদালতে জরুরি ভিত্তিতে মামলাটির শুনানি চেয়ে আর্জি জানায় তারা। পরে জানা গিয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট ওই আর্জিতে সাড়া দেয়নি। পুলিশ সূত্রে খবর, এই আইনি প্রক্রিয়ার কারণেই মঙ্গলবার শাহজাহানকে হেফাজতে পায়নি সিবিআই।