বিধাননগর পুরসভায় বেআইনি হোর্ডিং নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
যত্রতত্র লাগানো হচ্ছে হোর্ডিং। মানা হচ্ছে না কোনও নিয়ম। এমনটাই অভিযোগ বিধাননগরে। বেআইনি হোর্ডিং সংক্রান্ত অভিযোগে কী পদক্ষেপ করেছে বিধাননগর পুরসভা, তা জানতে চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। পুরসভার কাছ থেকে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। বেআইনি হোর্ডিংয়ের বিষয়ে পদক্ষেপের কথা পুরসভা থেকে রিপোর্ট আকারে জানাতে হবে আদালতে। এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছ থেকেও রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে হাই কোর্টে।
বিধাননগর পুরসভা এলাকায় বেআইনি হোর্ডিং নিয়ে আদালতে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন আইনজীবী দিবায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি ছিল। অভিযোগ, বিধাননগরে বেআইনি ভাবে যত্রতত্র হোর্ডিং লাগানো হচ্ছে। পুরসভার এই সংক্রান্ত যে নির্দেশিকা রয়েছে, তা মানা হচ্ছে না। মামলাকারীর বক্তব্য, বিভিন্ন হোর্ডিং থেকে বিপুল পরিমাণে রাজস্ব আসে পুরসভার কাছে। তাদের কয়েক হাজার কোটি টাকা আয় হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও বেআইনি হোর্ডিংয়ের বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন না পুর কর্তৃপক্ষ। বিধাননগর পুরসভার তরফে হোর্ডিংয়ের নিয়ম মানতে তেমন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। বেশির ভাগ হোর্ডিং পুরসভার অনুমতি ছাড়াই লাগানো হচ্ছে বলে অভিযোগ।
মামলাকারীর আরও অভিযোগ, নিয়ম মেনে হোর্ডিং না লাগানোয় তা থেকে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। বেআইনি হোর্ডিয়ের নির্দিষ্ট কোনও পরিকাঠামো থাকছে না। মামলাকারী জানান, এমন কয়েকশো হোর্ডিংয়ে ছেয়ে গিয়েছে বিধাননগর। এমনকি, এই সংক্রান্ত বিষয়ে পুরসভার একটি বৈঠকে ১৩০টি বেআইনি হোর্ডিংয়ের কথা স্বীকারও করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ, হোর্ডিংয়ের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হোর্ডিং নিয়ে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা থাকা উচিত সর্বত্র। না হলে তা থেকে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থেকে যায়। বিধাননগর পুরসভার তরফে আদালতে জানানো হয়েছে, হোর্ডিং নিয়ে তাদের নির্দিষ্ট আইন এবং নির্দেশিকা রয়েছে। এই বিষয়ে অভিযোগ পেলে পুরসভা পদক্ষেপও করে।
এর পরেই প্রধান বিচারপতি বিধাননগর পুরসভার হোর্ডিং সংক্রান্ত অভিযোগে মুম্বইয়ের বিলবোর্ডকাণ্ডের প্রসঙ্গ তোলেন। গত মে মাসে মুম্বইয়ের ঘাটকোপর এলাকায় উপড়ে যায় বিশালাকার একটি ধাতব বিজ্ঞাপনের বোর্ড। তাতে চাপা পড়ে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছিলেন প্রায় ৮০ জন। সেই ঘটনার উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে হোর্ডিং লাগানোর অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সংক্রান্ত বিষয়ে মহারাষ্ট্রের ঘটনার কথা মনে পড়ছে। পুরসভার বিষয়টি দেখা উচিত।’’ ১৫ অগস্টের পরে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানিয়েছে আদালত।