—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বর্ধমান-আরামবাগ রাজ্য সড়কে দামোদরের উপরে ‘শিল্প সেতু’ নির্মাণের কাজে এক ধাপ এগোল পূর্ত দফতর। প্রশাসন সূত্রের খবর, গত মে মাসে প্রথম দরপত্রে কোনও সংস্থা সেতু তৈরিতে আগ্রহ দেখায়নি। ২৪ অগস্ট দ্বিতীয় বার দরপত্র ডাকা হলে একটি বহুজাতিক নির্মাণ সংস্থা প্রযুক্তিগত বিভাগে উত্তীর্ণ হয়। আর্থিক বিষয়টি দেখতে ওই দরপত্র অর্থ দফতরে পাঠিয়েছে পূর্ত দফতরের প্রকল্প কার্যকরণ বিভাগ (পিআইইউ)। ইতিমধ্যে প্রস্তাবিত সেতুর দুই দিকের জমির ‘দখলদারদের’ উঠে যাওয়ার নোটিস ধরাচ্ছে পূর্ত দফতর।
সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার (পিআইইউ) সুমন জানা বলেন, “ওই দরপত্র অনুমোদনের জন্য অর্থ দফতরে পাঠানো হয়েছে।” গত রাজ্য বাজেটে বলা হয়েছিল, দামোদরের উপরে কৃষকসেতুর পাশে শিল্প সেতু গড়তে ২৪৬ কোটি টাকা দেওয়া হবে। তার মধ্যে ১০০ কোটি টাকা বাজেটে বরাদ্দও হয়। এ ছাড়া, কৃষকসেতুর আগে ইডেন ক্যানালের সেতুর মতো আর একটি সেতু তৈরির কথাও রয়েছে। ইডেন ক্যানালের কাছে সাড়ে পাঁচ ফুট চওড়া ও সাড়ে তিন ফুট লম্বা আন্ডারপাস তৈরি হবে বলে দরপত্রে উল্লেখ রয়েছে। তবে সেতুতে ওঠার সংযোগকারী রাস্তা (অ্যাপ্রোচ রোড) তৈরির জন্য পূর্ত দফতর এখনও দরপত্র ডাকেনি।
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা যায়, শিল্পসেতু ও ইডেন ক্যানালের সেতুর জন্য ২৩৫.২২ কোটি টাকার দরপত্র ডাকা হয়েছে। শিল্পসেতুটি হবে কৃষকসেতুর প্রায় ৩০ মিটার দূরে পূর্ব দিকে। চারটি স্তম্ভের উপরে তৈরি হবে ৬৪০ মিটার লম্বা তিন লেনের সেতুটি। দু’পাশে ফুটপাত থাকবে। সংযোগকারী রাস্তা ধরলে সেতুটি হবে ১২০০ মিটার দীর্ঘ। তেলিপুকুর মোড়ের কিছু দূর থেকে সেতুতে ওঠার রাস্তা তৈরি হবে। অন্যপ্রান্তের রাস্তা নামবে পলেমপুর পেরিয়ে। সংযোগকারী রাস্তা হবে চার লেনের।
দরপত্র অনুযায়ী বরাত পাওয়ার ৯১৩ দিনের মধ্যে দু’টি সেতুর কাজ শেষ করতে হবে। নির্মাণকারী সংস্থাকে ১০ বছর সেতুর দেখভাল করতে হবে। পূর্ত দফতরের দাবি, সেতু বা সংযোগকারী রাস্তা তৈরির জন্য প্রশাসনকে জমি কিনতে হবে না। পূর্ত দফতর, সেচ দফতরের হাতে জমি রয়েছে। সেতু তৈরির জন্য জমির প্রয়োজন নেই। তবে সংযোগকারী চার লেনের রাস্তার জন্য জমি দরকার। সেই জমির জবরদখলকারীদের সরে যাওয়ার নোটিস ধরানো হচ্ছে।
পূর্ত দফতরের দাবি, প্রায় ৪৭ বছরের পুরনো কৃষকসেতুটিও তাদের নজরদারিতে রয়েছে। ২০২০-এ ওই সেতুর কাঠামোর ভারসাম্য (স্ট্রাকচারাল স্টেবিলিটি) সন্তোষজনক ছিল। স্বাস্থ্যপরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হয়েছে সেটি। এ বছরও সেতুর ‘স্ট্রাকচারাল স্টেবিলিটি’ ও স্বাস্থ্যপরীক্ষা করার সম্ভাবনা রয়েছে। দফতরের এক কর্তার দাবি, “শিল্প সেতু তৈরি হওয়ার পরেই কৃষকসেতুকে তিন লেন করার ভাবনা রয়েছে। সেই প্রস্তাব সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।”