গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
দুই বিচারপতি। দুই মত! এক জন সকলের জামিন মঞ্জুর করলেন। অন্য জনের নির্দেশে আটকে গেল পাঁচ জনের জামিন। ফলে তাঁদের জামিন মামলা এ বার যাচ্ছে কলকাতা হাই কোর্টের তৃতীয় বেঞ্চে।
কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে বুধবার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ ন’জনের জামিন মামলার রায় ছিল। দুর্গাপুজোর আগেই শুনানি শেষ হয়েছিল। কিন্তু রায়দান স্থগিত ছিল। মঙ্গলবার দুপুর ১টা নাগাদ সেই মামলায় রায় পড়ে শোনান দুই বিচারপতি। কিন্তু সেই সময় দেখা গেল দুই বিচারপতির ভিন্ন মত!
রায় পড়ার শুরুতেই বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই মামলার রায়ের দু’টি ভাগ রয়েছে। তবে ফলাফল একই। তার পরেই বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তিনি সকলেরই অর্থাৎ ন’জনেরই জামিন মঞ্জুর করছেন। কিন্তু বিচারপতি সিংহ রায় ভিন্ন মত দেন। তিনি সকলের জামিন মঞ্জুর করেননি। ন’জনের মধ্যে চার জন— কৌশিক ঘোষ, শেখ আলি ইমাম, সুব্রত সামন্ত রায় এবং চন্দন মণ্ডলের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারপতি সিংহ রায়। কিন্তু তিনি বাকি পাঁচ জন অর্থাৎ পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, অশোক সাহা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় এবং শান্তিপ্রসাদ সিন্হার জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন।
কৌশিক-সহ চার জনের জামিন নিয়ে দুই বিচারপতিই একমত হন। কিন্তু পার্থদের নিয়ে তাঁরা ভিন্ন মত পোষণ করায় কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি সিংহ রায় জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করার কারণেই এই মামলা তৃতীয় বেঞ্চে গেল। তবে কার সিঙ্গল বেঞ্চে এই মামলার রায় চূড়ান্ত হবে, তা ঠিক করবেন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম।
গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ— এই চার মামলায় বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার হন ওই ন’জন। তার মধ্যে গ্রুপ সি মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন পার্থ, সুবীরেশ, অশোক, শান্তিপ্রসাদ, চন্দন। গ্রুপ ডি মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন শুধুমাত্র সুব্রত। তবে পার্থ এবং চন্দন ছাড়া নবম-দশম শ্রেণির মামলায় সাত জনকেই গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির মামলায় শুধু গ্রেফতার হয়েছিলেন শান্তিপ্রসাদ।
২০২২ সালের ২৩ জুলাই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। পরে তাঁকে হেফাজতে নেয় সিবিআই। জামিন চেয়ে এর আগে একাধিক বার হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন পার্থ। হাই কোর্টের সিঙ্গল এবং ডিভিশন বেঞ্চে খারিজ হয় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর আবেদন। এর আগে ইডির মামলায় জামিন চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পার্থ। গত এপ্রিলের ওই শুনানি শেষে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ পার্থের জামিনের আবেদন খারিজ করেন। পরে সিবিআইয়ের মামলায় জামিন চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পার্থ-সহ ন’জন। প্রায় ছ’মাস ধরে ওই জামিন মামলাগুলির শুনানি চলে হাই কোর্টে। বুধবার সেই মামলাতেই রায় দিল হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
হাই কোর্টে খারিজ হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে ইডির মামলায় জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন পার্থ। বুধবার সেই মামলার শুনানির কথা থাকলেও বেঞ্চ না বসায় তা পিছিয়ে যায়। দিন কয়েক আগেই প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় পার্থকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সেই মামলায় জামিন চেয়ে ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে আবেদন করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। নিম্ন আদালতে সেই মামলারও শুনানি চল