SSC Verdict in High Court

এসএসসি মামলার রায় ঘোষণার সময় বেঁধে দেয় সুপ্রিম কোর্ট, নেপথ্যে এক বাঙালি বিচারপতির বেঞ্চ

হাই কোর্ট ঘুরে সুপ্রিম কোর্ট হয়ে ফের হাই কোর্ট। এসএসসি মামলার দীর্ঘ আইনি পরিক্রমা শেষ হল সোমবার। এসএসসি মামলার নিষ্পত্তিতে বড় ভূমিকা রয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টের এক বাঙালি বিচারপতিরও।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪ ১২:১১
Calcutta High Court made order of SSC case after Supreme Court directed that

বিচারপতি (অধুনা অবসরপ্রাপ্ত) অনিরুদ্ধ বসু। —ফাইল চিত্র

৯ নভেম্বর, ২০২৩। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল ছ’মাসের মধ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর যাবতীয় মামলার শুনানি শেষ করতে হবে। শীর্ষ আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হওয়ার কথা ছিল আগামী ৯ মে।

Advertisement

২২ এপ্রিল, ২০২৪। সুপ্রিম কোর্ট নির্ধারিত সময়সীমার আগেই এসএসসি মামলার রায় ঘোষণা করল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ রায় ঘোষণা করে। প্রথম হাই কোর্টের একক বেঞ্চ, তার পর ডিভিশন বেঞ্চ ঘুরে সুপ্রিম কোর্ট হয়ে ফের হাই কোর্ট। এসএসসি মামলার দীর্ঘ আইনি পরিক্রমা শেষ হল সোমবার। এসএসসি মামলার নিষ্পত্তিতে বড় ভূমিকা রয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টের এক বাঙালি বিচারপতির বেঞ্চেরও।

এসএসসির গ্ৰুপ সি, গ্ৰুপ ডি, নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ২৪ হাজারের বেশি শূন্যপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই মামলায় অনেকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। চাকরিপ্রাপকদের একাংশ অভিজিতের নির্দেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। তবে হাই কোর্ট অভিজিতের চাকরি বাতিলের নির্দেশই বহাল রাখে। তার পর চাকরিপ্রাপকদের একাংশ সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। প্রথম মামলা দায়ের হয় ২০২৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি।

এসএসসি-র সব মামলা একত্র করে ওই বছরেরই ৩ মার্চ থেকে শীর্ষ আদালতে শুনানি শুরু হয়। প্রায় আট মাস ধরে শুনানি চলার পর ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর বিচারপতি (অধুনা অবসরপ্রাপ্ত) অনিরুদ্ধ বসু এবং বেলা এম ত্রিবেদীর বেঞ্চ মূলত পাঁচটি নির্দেশ দেয়।

সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমকে নির্দেশ দেয় যে, এসএসসি সংক্রান্ত মামলাগুলির শুনানির জন্য একটি বিশেষ বেঞ্চ গঠন করতে হবে। ওই বিশেষ বেঞ্চকে ছ’মাসের মধ্যে শুনানি শেষ করে রায় দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। শীর্ষ আদালতের তরফে আরও বলা হয়, হাই কোর্টের বিশেষ বেঞ্চকে এসএসসি মামলার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখতে হবে। তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে বলা হয়, তাদের দু’মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে এবং বিশেষ বেঞ্চের কাছে তদন্ত-রিপোর্ট জমা দিতে হবে। তবে সুপ্রিম কোর্ট তখন চাকরি বাতিলের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। অভিজিৎ কমবেশি যে ৫০০০ জনের চাকরি বাতিল করেছিলেন, তাঁদের অনেকেই পুনরায় চাকরিতে যোগ দেন।

তবে হাই কোর্টে এসএসসির গ্রুপ ডি মামলার একটি শুনানিতে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ রাজ্যের তৃণমূল মন্ত্রিসভার সব সদস্যের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি তাঁর পর্যবেক্ষণে এ-ও বলেছিলেন যে, নির্বাচন কমিশনকে বলব তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীক কেড়ে নেওয়ার জন্য। বিচারপতির নির্দেশ এবং ওই মন্তব্যের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ অভিজিতের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়। তবে এই মামলাটি বাদ দিয়ে এসএসসি সংক্রান্ত সব মামলাই হাই কোর্টে পাঠিয়েছিল শীর্ষ আদালত। অবশেষে সোমবার এসএসসি মামলায় রায় জানিয়ে দিল হাই কোর্ট।

আরও পড়ুন
Advertisement