WB Panchayat Election 2023

হাই কোর্টে খারিজ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সিদ্ধান্ত, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষেই রায়

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক রাজ্যের স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করবেন বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। এর পাল্টা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৩ ১১:৪৩
photo of Rajiv Sinha

রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ। —ফাইল চিত্র।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে যখন একের পর এক রায় রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন কমিশনের বিপক্ষে গিয়েছে, তখন এই প্রথম কমিশনের পক্ষে রায় গেল একটি মামলার। পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নোটিস খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন পর্বে গোলমালের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করেছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসাবে কমিশনের ডিজি (তদন্ত) রাজ্যের স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করবেন বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। এর পাল্টা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেই মামলায় শুক্রবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ওই নোটিস খারিজ করে দিলেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। স্পর্শকাতর এলাকা মানবাধিকার কমিশনের ডিজি চিহ্নিত করতে পারবেন না বলেও নির্দেশ দিল উচ্চ আদালত। গত কয়েক দিনে আইনি লড়াইয়ে বার বার আদালতে অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেই পরিস্থিতিতে এই প্রথম কোনও মামলায় কমিশনের পক্ষে রায় গেল।

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে আইনি লড়াইয়ে শামিল হয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের সব জেলাতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। প্রথমে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ জানিয়েছিলেন, আদালতের নির্দেশ মতোই পদক্ষেপ করা হবে। কিন্তু পরে সেই অবস্থান বদল করে কমিশন। হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন। গত মঙ্গলবার সেই মামলায় রাজ্য এবং কমিশনের আবেদন খারিজ করে হাই কোর্টের নির্দেশই বহাল রেখেছে শীর্ষ আদালত। কিন্তু তার পরও বাহিনী নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটেনি। আদালতের নির্দেশের পরে পঞ্চায়েত ভোটে ২২টি জেলার জন্য ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিল কমিশন। বুধবার সেই বাহিনী চাওয়া নিয়ে হাই কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে কমিশন। পঞ্চায়েত ভোটের জন্য রাজ্যে অন্তত ৮২ হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানকে আনতে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। আইনি লড়াইয়ে গিয়ে প্রতি বারই অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে কমিশনকে। এই আবহে প্রথম বার কোনও আইনি লড়াইয়ে আদালতের নির্দেশ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষে গেল।

পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বে অশান্তির ঘটনার আবহে নোটিস দিয়েছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছিল, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ডিজি। পাশাপাশি পঞ্চায়েত ভোটের সময় যে সব এলাকায় গোলমালের আশঙ্কা রয়েছে, সেই স্পর্শকাতর এলাকাগুলি চিহ্নিত করবেন ডিজি। স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করার পর কমিশনকে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেবেন ডিজি। ওই এলাকাগুলিতে পঞ্চায়েত ভোটের সময় বা পরে প্রয়োজনে ‘মাইক্রো হিউম্যান রাইটস অবজ়ার্ভার’ মোতায়নের পরামর্শ দেবেন ডিজি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এবং পরে মানবাধিকার যাতে লঙ্ঘন না হয়, তা সুনিশ্চিত করতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিবকেও নোটিস দিয়েছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। ভোট প্রক্রিয়ায় কী ভাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন পদক্ষেপ করতে পারে, এই নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। শেষমেশ, কমিশনের পক্ষেই নির্দেশ দিল আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement