কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
এসএসসির প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের বেতন ফেরত দিতে বলেছে আদালত। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, চার সপ্তাহের মধ্যে ওই চাকরিপ্রাপকদের বেতন ফেরত দিতে হবে। দিতে হবে সুদও। মেয়াদ-উত্তীর্ণ চাকরিপ্রাপকদের বছরে ১২ শতাংশ হারে সুদ দিতে বলেছে আদালত। যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও হাই কোর্টের এই নির্দেশ প্রযোজ্য হবে।
এ বিষয়ে হাই কোর্টের বিচারপতি বসাকের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, জনগণের টাকায় বেতন পেয়েছেন ওই চাকরিপ্রাপকেরা। তাই বেতন তাঁদের ফিরিয়ে দিতে হবে। সেই সঙ্গে সুদও দিতে হবে। বেতনের পুরো টাকা তাঁরা ফিরিয়েছেন কি না, তা আদালতে জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের।
সোমবার এসএসসি মামলার রায় ঘোষণা করেছে হাই কোর্ট। ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বাতিল হয়ে গিয়েছে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি। আদালত জানিয়েছে, এই মামলায় তদন্ত চালিয়ে যাবে সিবিআই। তদন্তের প্রয়োজনে সন্দেহভাজনদের হেফাজতে নিয়ে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। এসএসসির উত্তরপত্রও ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে বলেছে আদালত। জনসাধারণ যাতে উত্তরপত্র দেখতে পায়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
সব চাকরি বাতিল করলেও এক জনের চাকরি যায়নি। সোমা দাস নামের ক্যান্সার আক্রান্ত এক চাকরিপ্রাপকের নিয়োগ মানবিক কারণে বাতিল করা হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে যে মামলা হয়েছিল, কলকাতা হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সেই মামলা শুনেছিলেন এবং ৮১৬১টি চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ডিভিশন বেঞ্চেও সেই নির্দেশ বহাল থাকে। এর পর রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। সেখান থেকে মামলা ফেরানো হয়েছে হাই কোর্টে। বিচারপতি বসাকের বিশেষ বেঞ্চে মে মাসের মধ্যে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করতে বলেছিল শীর্ষ আদালত। সাড়ে তিন মাসের মধ্যেই বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। সোমবার তার রায় দিল আদালত।