(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
এসএসসি মামলার রায় ঘোষণার পরে কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা বিজেপি নেতা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তিনি হাই কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘আদালত উপযুক্ত রায় দিয়েছে। তবে আজ আমার স্বস্তির দিন নয়। কারণ এই মুখ্যমন্ত্রীর অধীনে আমার রাজ্য চলছে। এত দিন ধরে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে প্রকৃত জ্ঞানী চাকরিপ্রার্থীদের। আশা করব, তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত করা হবে।’’
অভিজিৎ বলেন, ‘‘যাঁরা যোগ্য প্রার্থী তাঁদের বঞ্চিত করা হয়েছে। তাঁদের ঠকিয়েছেন এই মিথ্যাচারী মুখ্যমন্ত্রী। বঞ্চিতদের মধ্যে হিন্দু, মুসলমান সকলে আছেন। সকলের উচিত মমতাকে বয়কট করা। ওঁকে এখনই পদত্যাগ করতে হবে। আমার খারাপ লাগছে, এমন এক জন মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যে আছি। উনি জোচ্চুরিকে প্রশ্রয় দেন। বিন্দুমাত্র লজ্জা থাকলে পদত্যাগ করা উচিত। রাষ্ট্রপতি শাসনের অধীনে নির্বাচন হওয়া উচিত।’’
হাই কোর্টের বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে গত ৭ মার্চ বিজেপিতে যোগ দেন অভিজিৎ। লোকসভা নির্বাচনে তমলুক কেন্দ্র থেকে তাঁকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। বর্তমানে প্রচারের জন্য তিনি তমলুকেই রয়েছেন। সেখান থেকেই সোমবার হাই কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।
অভিজিৎ বলেন, ‘‘আমাদের দেশের বিচারব্যবস্থা সাধারণত অবিচার থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখে। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতিরাও সেই কাজ করেছেন। এখন আমাদের আনন্দের দিন নয়। আমি যখন বিচার করছিলাম, অনাচার ধরা পড়েছিল। আবার ধরা পড়েছে। উপযুক্ত রায় দিয়েছে আদালত।’’
উল্লেখ্য, এসএসসি মামলার অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে অভিজিতের। তিনিই প্রথম এই মামলা শোনেন এবং ৮১৬১টি চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন। ডিভিশন বেঞ্চেও সেই নির্দেশ বহাল ছিল। পরে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে যায়। সেখান থেকে এসএসসি মামলা আবার ফেরানো হয় হাই কোর্টে। বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে মে মাসের মধ্যে বিচারপ্রক্রিয়া শেষের নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সাড়ে তিন মাসেই সেই প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। ২০ মার্চ বিচার শেষে রায় স্থগিত রেখেছিল আদালত।
সোমবার এসএসসি মামলার রায় ঘোষণা করেছে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বাতিল হয়ে গিয়েছে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি। আদালত জানিয়েছে, এসএসসি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের চার সপ্তাহের মধ্যে সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে হবে। সুদের হার হবে বছরে ১২ শতাংশ। লোকসভা ভোটের মাঝে এসএসসি মামলার এই রায় রাজ্য সরকারের কাছে বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে। রায়ের পরে রাজ্যের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন অভিজিৎ।