কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। —ফাইল চিত্র।
৩৯ জন চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগ করার জন্য নতুন প্যানেল প্রকাশ করে সিদ্ধান্ত নিতে বলল হাই কোর্ট। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, পর্ষদকে নতুন প্যানেল প্রকাশ করে ৩৯ জন প্রার্থীকে নিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
শুক্রবার হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে প্রাথমিক মামলার শুনানি ছিল। এই মামলায় ৯,৫৩৩ জনের নিয়োগের একটি প্যানেল প্রকাশ করার নির্দেশ আগেই দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, তাঁরা ডিএলএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তাঁদের ওই প্রশিক্ষণের শংসাপত্র যদি গ্রাহ্য হয়, তবে সুপ্রিম কোর্টের প্যানেলের ৯,৫৩৩ জন চাকরিপ্রার্থীর চেয়েও তাঁদের প্রাপ্য নম্বর বেশি।
এর পরেই হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে যে প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছে, তা স্পর্শ করা যাবে না। তবে এই ডিএলএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থীদের জন্য নতুন প্যানেল তৈরি করতে হবে। বিচারপতি মান্থার নির্দেশ, ৩৯ জন প্রার্থীর ডিএলএড প্রশিক্ষণের শংসাপত্র আগে যাচাই করতে হবে। তাঁরা পাশ করেছেন কি না, দেখতে হবে। যদি দেখা যায়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৈরি প্যানেলের অন্তর্ভুক্ত প্রার্থীদের থেকে মামলকারীরা বেশি নম্বর পেয়েছেন, তা হলে এঁদের জন্য আলাদা প্যানেল করতে হবে। সেই মতো নিয়োগ করবে পর্ষদ। আদালতে মামলাকারীদের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম।
এর আগে অন্য ১২ জন চাকরিপ্রার্থীকে একই ভাবে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল উচ্চ আদালত। ২০২২ সালে প্রাথমিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে ১২ জন চাকরিপ্রার্থী ডিএলএড, বিএড দু’রকম প্রশিক্ষণই নিয়েছিলেন। তাঁদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানিয়েছেন, বিএড প্রশিক্ষণের কথা উল্লেখ করেই প্রাথমিক নিয়োগের জন্য আবেদন করেছিলেন তাঁরা। পরে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, প্রাথমিক স্কুলে পড়াতে পারবেন শুধু মাত্র ডিএলএড প্রশিক্ষিতেরাই। ফলে বিএড প্রশিক্ষিতেরা বাদ চলে যান।
কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ২০২২ সালের প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। সেই স্থগিতাদেশ তুলে নেয় সুপ্রিম কোর্ট। প্রায় ১২ হাজার প্রার্থীর মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ দেয়। সেই মতো ১১ হাজার ৭৫৮টি শূন্যপদের মধ্যে ন’হাজার ৫৩৩ পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রার্থীদের প্যানেল প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তার পর ওই ১২ জন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। ডিএলএড প্রশিক্ষিত আরও ৩৯ জনও আলাদা করে মামলা করেছেন আদালতে। তাঁদের ক্ষেত্রেই আলাদা প্যানেল প্রকাশের নির্দেশ দিল হাই কোর্ট।