Abhishek Banerjee

অভিষেকের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে হাই কোর্টে বিকাশ, লিখিত অভিযোগ জানাতে বললেন প্রধান বিচারপতি

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। এক বিচারপতি প্রসঙ্গে অভিষেকের মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৩ ১১:৩৮
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।

বিচারপতিকে নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তৃণমূল সাংসদের নাম না করে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি। এই প্রেক্ষিতে লিখিত অভিযোগ জানাতে বলেছেন প্রধান বিচারপতি।

আদালতে বিকাশরঞ্জন বলেন, ‘‘আদালতের গরিমা নিয়ে একটি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছি। এক জন ভদ্রলোক এক জন নির্দিষ্ট বিচারপতির নির্দেশ নিয়ে অভিযোগ করেছেন, হাই কোর্ট সমাজ বিরোধীদের রক্ষাকবচ দিচ্ছে। সমাজবিরোধীরা যাতে অবাধে ঘুরে বেড়াতে পারে সেই ব্যবস্থা করেছে। তাঁর অভিযোগ হাই কোর্টের দিকে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এক জন বিশিষ্ট অধ্যাপক বলেছেন, এটা বন্ধ না হলে হাই কোর্টের গরিমা সম্পূর্ণ নষ্ট হবে। প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল আমাকে বলেছেন, এই বিষয়টি নিয়ে কিছু করুন। মাফিয়া লিডার সাধারণ মানুষের আস্থা ভঙ্গ করে আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।’’

Advertisement

বিকাশরঞ্জন বলেন, ‘‘আমার আবেদন আদালতের স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে বিষয়টি দেখা উচিত। বিশেষ বেঞ্চ প্রায়ই একই বিষয়ে বিবেচনা করছে। বিশেষ বেঞ্চে এই মামলাটিও পাঠানো হোক। একই ব্যক্তি যুক্ত রয়েছেন।’’ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনারা কি মামলা দায়ের করেছেন?’’ বিকাশরঞ্জন বলেন, ‘‘মামলা দায়ের করতে গেলে অ্যাডভোকেট জেনারেলের অনুমতি প্রয়োজন। আমরা চাইছি আদালত স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলাটি নিক। আমি সব তথ্য আদালতের সামনে তুলে ধরছি।’’ অন্য এক আইনজীবী বলেন, ‘‘ওই একই ব্যক্তি আগেও আদালত সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন। তখন কিছু রাখঢাক ছিল। এখন তা-ও নেই।’’

পঞ্চায়েত ভোটের পর রাজনৈতিক সংঘর্ষে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের ১৪ জন জখম তৃণমূল কর্মীকে এসএসকেএমে দেখতে গিয়েছিলেন অভিষেক। গত শুক্রবার সেখান থেকে বেরোনোর সময় হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়েই বিচারব্যবস্থার একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। অভিষেক বলেন, ‘‘বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা সমাজবিরোধীদের রক্ষাকবচ দিচ্ছেন।’’ অভিষেক এ-ও বলেন, যদি এই বক্তব্যের জন্য তাঁকে আদালত অবমাননার দায়ে জেলে যেতে হয়, তা হলে তিনি ১০ হাজার বার জেলে যেতেও রাজি! কিন্তু তিনি সত্য বলবেনই। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে রক্ষাকবচ দেওয়ার কারণে এ ভাবেই বিচারপতি মান্থার নাম করে সমালোচনা করেন তিনি। অভিষেকের এই মন্তব্য ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। অভিষেকের সাংসদ পদ খারিজের আবেদন জানিয়ে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি লিখেছেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।

(এক নির্বাচিত সাংসদের জনসমক্ষে করা মন্তব্য এই প্রতিবেদনে পুনর্বার তুলে ধরা হয়েছে মাত্র। আনন্দবাজার অনলাইনের প্রধান সম্পাদক, সম্পাদক এবং সমগ্র বার্তা বিভাগের কর্মীরা এই মন্তব্যের সঙ্গে একমত নন। আনন্দবাজার অনলাইনের প্রধান সম্পাদক, সম্পাদক এবং কর্তৃপক্ষের বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা এবং মাননীয় বিচারপতিদের প্রতি আস্থা, শ্রদ্ধা অটুট এবং অসীম। সম্মাননীয় পাঠক বা সংশ্লিষ্ট অন্য কেউ এই প্রতিবেদনকে কোনও ভাবেই যেন বিচারব্যবস্থা এবং বিচারপতিদের সম্পর্কে অশোভন মন্তব্যের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অনুমোদন কিংবা সমর্থন হিসেবে বিবেচনা না করেন।)

Advertisement
আরও পড়ুন