মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে) এবং সুকান্ত মজুমদার। —ফাইল চিত্র।
রামমন্দির উদ্বোধনের দিন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের জন্য অর্ধদিবস ছুটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। এ বার এ রাজ্যেও ওই দিন ছুটি ঘোষণা করার দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। চিঠিতে অযোধ্যায় রামচন্দ্রের ‘পবিত্র জন্মভূমি পুনরুদ্ধার’-এর কাহিনিও মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন সুকান্ত।
চিঠির একদম শেষে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে সুকান্ত লিখেছেন “আপনার সদুত্তরের আশাপ্রার্থী।” মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ ‘বিদেশি আক্রমণকারীদের হাত থেকে রামচন্দ্রের জম্মস্থান পুনরুদ্ধারের লড়াই’-এ বাংলার দুই ‘বীরে’র অবদানের কথা উল্লেখ করেন। তৃণমূল সরকারের আমলে অনেক নতুন তিথি, পরব কিংবা জন্মদিবস সরকারি ছুটির আওতায় এসেছে, এ কথা উল্লেখ করে সুকান্ত মমতার উদ্দেশে লেখেন, “চলতি বছরের জন্য আপনার বিশেষ অধিকারে একটি বাড়তি ছুটি উপহার দিন রাজ্যবাসীকে।” সরকারি ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকেও ওই দিন ছুটির আওতায় রাখার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ‘অনুরোধ’ জানিয়েছেন সুকান্ত।
গত বৃহস্পতিবারই অর্ধদিবস ছুটির বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে কেন্দ্র। সেখানে বলা হয়, ২২ জানুয়ারি (সোমবার) সমস্ত কেন্দ্রীয় সরকারি অফিস, কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান এবং কেন্দ্রীয় সরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠান দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে শুধু কেন্দ্রীয় সরকারই নয়, একাধিক বিজেপিশাসিত রাজ্যও রামমন্দিরের ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ উপলক্ষে ছুটি ঘোষণা করেছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ওই দিন রাজ্যের সমস্ত স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি ঘোষণা করেছেন। উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশে রামমন্দিরের ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’র দিন মদের দোকানও বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। উত্তরাখণ্ড, ছত্তীসগঢ়, অসম, হরিয়ানাতেও প্রাণপ্রতিষ্ঠার দিন মদের দোকান বন্ধ থাকছে। বিজেপিশাসিত আর এক রাজ্য গোয়াতেও সমস্ত স্কুল এবং সরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
যাঁরা ছুটি পাবেন, রামমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান তাঁরা যাতে চাক্ষুষ করতে পারেন, তার জন্য সোমবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত গোটা অনুষ্ঠানই দেখানো হবে টেলিভিশনের পর্দায়। ডিডি নিউজ় এবং ডিডি ন্যাশনালে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’র অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারিত হবে। ইউটিউবেও সম্প্রচারিত হবে সেটি।
অবশ্য এ রাজ্যের শাসক তৃণমূল সুকান্তের দাবিতে সাড়া দেবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। সম্প্রতি রামমন্দির উদ্বোধনকে ‘ভোটের আগে গিমিক’ বলে আগে কটাক্ষ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা ওই দিনেই পাল্টা কর্মসূচির ডাক দেন। সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, ‘‘ওই দিন হাজরা থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত সংহতি মিছিল হবে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে সর্বধর্মের প্রতিনিধিদের নিয়ে ওই কর্মসূচি করব।’’ শুধু কলকাতা নয়, তৃণমূলের সর্বময় নেত্রীর নির্দেশ ছিল, ওই দিন সব জেলায়, সব ব্লকে সংহতি মিছিল করতে হবে। মূলত ‘সংহতি’র বার্তা দিতেই এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন বলে জানান তিনি।