(বাঁ দিকে) রুদ্রনীল ঘোষ। পাপিয়া অধিকারী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
সিপিএম বরাবরই নির্বাচনী প্রচারে দলের সাংস্কৃতিক শাখাকে কাজে লাগিয়েছে। গণসঙ্গীতের পাশাপাশি পথনাটকের মাধ্যমে রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছে। এমন পথে হেঁটেছে তৃণমূলও। বিজেপিও সাম্প্রতিক কালে অনেক কর্মসূচিতেই দলের সাংস্কৃতিক শাখাকে ব্যবহার করেছে। কিন্তু এই প্রথম বার নির্বাচন পরিচালন কমিটির মধ্যেই ‘সাংস্কৃতিক প্রচার’ নামে একটি বিভাগ তৈরি করা হয়েছে। সেই বিভাগে আবার দু’টি ভাগ। ‘লোকসংস্কৃতি দল’ এবং ‘পথ নাটক’। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে অভিনেত্রী পাপিয়া অধিকারী এবং অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষকে।
পাপিয়া এখন সে ভাবে অভিনয় জগতের সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও অতীতে অনেক ছবিতেই তাঁকে নায়িকা চরিত্রে দেখা গিয়েছে। টিভি এবং যাত্রাতেও অভিনয় করেছেন। এখন তাঁর একটি নাচ-গানের দল রয়েছে। ‘মুক্তি’ নামে সেই দল মূলত বিজেপির বিভিন্ন কর্মসূচিতেই অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ করে থাকে। গান, নাচ, অভিনয়ের মাধ্যমে ‘মুক্তি’র শিল্পীরা বিজেপির পক্ষে নানা রাজনৈতিক ও সামাজিক বার্তা দিয়ে থাকে। এ বার রাজ্য বিজেপির যা পরিকল্পনা তাতে শুধু নিজের দল পরিচালনার দায়িত্ব না দিয়ে গোটা রাজ্যে কী ভাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দলের হয়ে প্রচার করা যায় তা দেখতে হবে পাপিয়াকে।
দলের পক্ষে যে এমন আলোচনা হয়েছে সেটা প্রাথমিক ভাবে স্বীকার করলেও তিনি দলের পরিকল্পনা নিয়ে একটিও কথা বলতে রাজি নন। পাপিয়া বলেন, ‘‘এটা একান্ত ভাবে দলের বিষয়। এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কথা বলতে বলেননি নেতৃত্ব। সুতরাং আমার কোনও মন্তব্য নেই।’’ তবে মঙ্গলবার বিজেপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির বৈঠকে যে তিনি হাজির ছিলেন সে কথা স্বীকার করেছেন পাপিয়া।
মুখ খুলতে নারাজ রুদ্রনীলও। যদিও সমাজমাধ্যমে তিনি নিয়মিত মুখ খোলেন দলের হয়ে প্রচারের জন্য। রাজ্য সরকার বা তৃণমূলকে আক্রমণ করে স্বরচিত কবিতা শোনান সমাজমাধ্যমের পাশাপাশি দলীয় মঞ্চ থেকেও। সম্প্রতি কলকাতায় অমিত শাহের সভার আগে একটি থিম সং বানিয়েছিল রাজ্য বিজেপি। সেটির একটি ভিডিয়ো করেছিলেন রুদ্রনীল। দলেরই নেতাদের অভিনয় করিয়ে সেটির পরিচালনার পাশাপাশি রুদ্রনীলকেও দেখা গিয়েছিল ভিডিয়োতে। এ বার বিজেপি চাইছে, শুধু নিজে অভিনয় করা বা মঞ্চে হাজির হওয়ার পরিবর্তে রাজ্যের সর্বত্র বিজেপির ছোট ছোট পথ নাটকের দল গড়ে উঠুক। সেই সব নাটক মঞ্চস্থ হবে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে। রাজ্য বিজেপির তরফে গোটা বিষয়টির দেখাশোনা করবেন রুদ্রনীল।
প্রসঙ্গত, পাপিয়ার মতো রুদ্রনীলও গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে আগে বিজেপিতে যোগ দেন। পাপিয়া হাওড়ার উলুবেড়িয়া দক্ষিণ এবং রুদ্রনীল কলকাতার ভবানীপুর আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন। দু’জনেই জিততে পারেননি। সেই সময়ে বিজেপিতে আসা অনেক অভিনেতাই হেরে যাওয়ার পরে বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেন। তবে পাপিয়া ও রুদ্রনীল সেটা করেননি। তারই পুরস্কার হিসাবে বড় দায়িত্ব পেলেন লোকসভা নির্বাচন পরিচালন কমিটিতে।