কৌস্তুভ ইস্যুতে কংগ্রেসকে একহাত শুভেন্দুর। ফাইল চিত্র।
গ্রেফতার হওয়া কৌস্তুভ বাগচী শনিবার বিকেলে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তুভের গ্রেফতারির প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে কৌস্তুভের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে সরব হয়েও কংগ্রেসকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি তিনি। প্রদেশ এবং এআইসিসি নেতৃত্ব বার বার কী ভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দলকে ‘সহযোগিতা করছেন’, ফেসবুক পোস্টে সেই অভিযোগ তুলে ধরেছেন শুভেন্দু।
শনিবার একটি ফেসবুক পোস্টে শুভেন্দু লিখেছেন, ‘‘কলকাতা হাই কোর্টের সুপরিচিত আইনজীবী ভ্রাতৃপ্রতিম কৌস্তুভ বাগচীর বাড়িতে মাঝরাতে মমতার পুলিশের হানা দেওয়া ও বেআইনি গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা জানাই।’’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘কৌস্তুভ অবশ্যই এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এক প্রতিবাদী কণ্ঠ, তার গ্রেফতারি হল পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী কণ্ঠকে দমন করার এক অপচেষ্টা।’’
শুভেন্দুর ফেসবুক পোস্টের ছত্রে ছত্রে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি আক্রমণ প্রতিফলিত হয়েছে। শুভেন্দু লিখেছেন, ‘‘মেট্রো ডেয়ারির মালিকানাধীন সংস্থা কেভেন্টারের হয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষে মামলা লড়তে মহামান্য কলকাতা হাই কোর্টে আসেন কংগ্রেসের বরিষ্ঠ কেন্দ্রীয় নেতা পি চিদাম্বরম।’’
২০১৮ সালে রাজ্যসভায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে কংগ্রেসের পাশাপাশি তৃণমূল বিধায়কদের সমর্থনে জয়ী হয়েছিলেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। সেই প্রসঙ্গ টেনে বিরোধী দলনেতার আক্রমণ, ‘‘ডিএ মামলায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের পক্ষে সওয়াল করছেন কংগ্রেসের সাংসদ-আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘হয়তো কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভার সদস্য করতে তৃণমূল বিধায়কেরা যে সমর্থন করেছিলেন তার প্রতিদান দিচ্ছেন।’’
অনুব্রত মণ্ডলের তিহাড় জেল যাওয়া আটকাতেও কংগ্রেসের এক প্রাক্তন নেতার দিকেই ইঙ্গিত করেছেন শুভেন্দু। তাঁর পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘‘কেষ্ট মণ্ডলের দিল্লি যাত্রা রুখতে ও জামিন করাতে মহামান্য দিল্লি হাইকোর্টে বুক চিতিয়ে লড়ছেন কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতা কপিল সিব্বল।’’ সর্বশেষ শুভেন্দু ভবানীপুর উপনির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে এনে খোঁচা দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বকে। তিনি লিখেছেন, ‘‘সর্বশেষে, আমার কাছে নন্দীগ্রামে ১৯৫৬ ভোটে হেরে মাননীয়া যখন ভবানীপুরে নির্বাচনে লড়তে গেলেন তখন কংগ্রেস সমর্থনসূচক ভাবে প্রতিনিধি নামাল না নির্বাচনে।’’ কংগ্রেস নেতাদের তৃণমূল তথা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘সখ্য’ থাকার অভিযোগে সরব হয়ে শুভেন্দু আরও লিখেছেন, ‘‘কংগ্রেসের এই রকম সিদ্ধান্তহীনতার ফল কৌস্তুভের মতো ব্যক্তিদের ওঠাতে হচ্ছে।’’
কৌস্তুভের গ্রেফতারির প্রতিবাদ জানিয়ে শুভেন্দুর দাবি, ‘‘যদি কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা গ্রেফতারির কারণ হয় তবে আগে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা উচিত দেশের সম্মানীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বারংবার তুইতোকারি করে ব্যক্তিগত কুরুচিকর শব্দবন্ধ প্রয়োগ করার জন্য।’’