রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রবিবার রাজ ভবনে। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।
প্রথমে সন্দেশখালি, তার পর বনগাঁ— রাজ্যে ইডি অফিসারদের উপর আক্রমণের ঘটনা উদ্বেগজনক ‘ট্রেন্ড’-এ পরিণত হচ্ছে বলে মনে করছে বিজেপি! রবিবার তারা এমনটাই জানিয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। তাঁকে অনুরোধ করেছে, যত দ্রুত সম্ভব এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার।
সন্দেশখালিতে ইডি অফিসারদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে গত শুক্রবার। এর পর রবিবার দুপুরেই রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল বোসের সঙ্গে দেখা করেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রাজ্যপালকে লিখিত ভাবে তাঁদের আবেদন জানান সুকান্ত। হাতে তুলে দেন একটি খোলা চিঠি।
পরে ওই চিঠি এবং রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর দেখা করার ছবি এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেন সুকান্ত। লেখেন, ‘‘ইডি অফিসারদের উপর যে ভাবে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের অনুগামীরা হামলা করেছেন, তা আতঙ্কের তো বটেই একই সঙ্গে এই ধরনের যে ট্রেন্ড বা ধারা তৈরি হচ্ছে তা-ও উদ্বেগজনক। রাজ্যপালকে আমরা বলেছি, তিনি যেন রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার সুরক্ষা এবং তার উপরে আমাদের বিশ্বাসকে সুনিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ করেন।’’
গত শুক্রবার সন্দেশখালির সরবেরিয়া গ্রামে গিয়ে গ্রামবাসীদের হামলার মুখে পড়েন ইডি আধিকারিকেরা। রেশন দুর্নীতির তদন্তে তৃণমূল নেতা শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে গিয়েছিল ইডির দল। সেখানে কয়েকশো গ্রামবাসী লাঠি, পাথর, ইট নিয়ে চড়াও হন ইডির অফিসার এবং সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর। মোট পাঁচ জন ইডি কর্তা এবং বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয়বাহিনীর জওয়ান গিয়েছিলেন সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বাড়ি। তাঁর বাড়ির সামনেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সরিয়ে ইডির কর্তাদের মারধর করেন গ্রামবাসীরা। তিন জন ইডি কর্তা জখম হন ওই হামলায়। তাঁদের হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয়। পরে ইডির তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, গ্রামবাসীরা তাদের অফিসারদের খুন করার চেষ্টা করেছিল। পরে জানা যায়, সন্দেশখালির পর বনগাঁতেও শঙ্কর আঢ্যের বাড়ি থেকে বেরনোর সময় স্থানীয় বাসিন্দারা ইট-পাথর নিয়ে আক্রমণ করেন ইডি কর্তাদের।
বিজেপি শুক্রবারই এই ঘটনার সমালোচনা করেছিল। রবিবার দুপুরে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত বিজেপির তরফে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি তুলে দেন রাজ্যপালের হাতে। চিঠির বিষয়বস্তু হিসাবে বিজেপি লিখেছে, ‘‘রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে উদ্বেগ’। ভিতরে সে দিনের ঘটনার বিবরণ দিয়ে বিজেপি লিখেছে, ‘‘রাজ্যপালের কাছে অনুরোধ, তিনি যেন পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেন এবং এমন ব্যবস্থা নেন যাতে তা বাস্তবে কাজে লাগে।’’।
তবে সুকান্তের এই সাক্ষাতের কয়েক ঘণ্টা আগেই রবিবার সকালে রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীও বলেছিলেন, তিনি রাজ্যপালকে অনুরোধ করবেন, যাতে দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হয়।