বাবুল ও দিলীপ বিবাদ সবার জানা। ফাইল চিত্র
বাবুল সুপ্রিয় আর বিজেপি-তে নেই। ঘোষিত ভাবে এখন তিনি তৃণমূলে। খুব তাড়াতাড়ি পদ্মের টিকিটে জেতা আসানসোলের সাংসদ পদও ছাড়বেন বলে জানিয়েছেন বাবুল। এত কিছুর পরেও মুখ খুলতে নারাজ বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি কিছু বলব না। যা বলার দিল্লি বলবে। দলের মুখপাত্র সাংবাদিক বৈঠক করে বলবেন।’’ বাবুলকে গুরুত্ব দেওয়া নিয়ে বরাবরই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মতের অমিল দেখা গিয়েছে দিলীপের। এ বার মন্তব্যের দায় দিল্লির দিকে ঠেলে দিয়ে যেন সেই মনোভাবই বুঝিয়ে দিলেন দিলীপ।
বাবুলের সঙ্গে দিলীপের বিবাদ রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের কাছে খুবই পরিচিত। যে দিন বাবুল রাজনীতি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন, সে দিনও বাবুল সাংসদ পদ ছাড়বেন কি না তা নিয়েপ্রশ্নের উত্তরে দিলীপ বলেছিলেন, ‘‘মাসির গোঁফ হলে মাসি বলব না মেসো বলব, তা ঠিক করব। আগে তো মাসির গোঁফ হোক।’’ পরে বিজেপি শিবিরে এমন আলোচনাও শোনা যায় যে, দিলীপের মন্তব্যে অখুশি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। মন্ত্রিত্ব হারানোর দিনে বাবুল যা টুইট করেছিলেন তা নিয়েও বিতর্ক কম হয়নি।
বাবুল নেটমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘হ্যাঁ, আমি মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছি। ইস্তফা দিতে (আস্ক টু রিজাইন) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটা সঠিক পদ্ধতি না-ও হতে পারে।’ দিলীপ-শিবিরের একাংশের বক্তব্য ছিল, আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তাঁর ওই পোস্টে প্রকারান্তরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাজের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এর পরেই দিলীপ সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন, ‘‘তাঁকে (বাবুল) যদি স্যাক (বরখাস্ত) করা হত, তা হলে কি ভাল হত? পদ্ধতি মেনে হয়েছে। আপনি পদ ছেড়ে দিন, অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। আপনাকে অন্য কাজে লাগানো হবে। সবাই তাই করেন। ১২ জন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। কেউ তো এমন লেখেনি? কাজের প্রতি আস্থা রাখা উচিত। পার্টির কাজ করছি, বিধায়ক সাংসদ যা হয়েছি, তা পার্টির জন্য।’’
বাবুল যার পাল্টা ফেসবুকে লেখেন, ‘রাজ্য সভাপতি হিসেবে মনের আনন্দে দিলীপদা অনেক কিছুই বলেন।’ আরও লেখেন, ‘উনি রাজ্য সভাপতি— সবার শ্রদ্ধার পাত্র! আমিও আন্তরিক শ্রদ্ধা জানালাম প্রিয় দিলীপদাকে।’ এর পরে আবার সংবাদমাধ্যমকে দিলীপ বলেন, ‘‘আমরা এক্সপেরিমেন্ট করেছিলাম। কাজে লাগেনি। পার্টির স্বার্থের থেকে যখন ব্যক্তিগত স্বার্থ বড় হয়, তখন সমস্যা তৈরি হয়। পার্টি যাদের উপর ভর করে এগিয়েছিল তারা আছে, সে ভাবেই পার্টি এগোবে।’’