তৃণমূলে বাবুল সুপ্রিয়।
বলেছিলেন আর রাজনীতি করবেন না। বলেছিলেন, তাঁর একটাই দল, একটাই বিশ্বাস। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এই ঘোষণা করেছিলেন গত ৩১ জুলাই। কিন্তু ১৮ সেপ্টেম্বর জানা গেল, তিনি রাজনীতিতেই রয়েছেন। প্রথম দল বিজেপি ছেড়ে এলেন তৃণমূলে। কিন্তু এর পর কী? রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়। দলবদলের পরে পরেই সাংবাদিক বৈঠক করে বাবুল জানিয়েছেন, এ বার আসানসোল আসন থেকে বিজেপি-র সাংসদ পদও ছেড়ে দেবেন। এ বার তৈরি হয়েছে নতুন এক প্রশ্ন। সম্প্রতি তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছেড়েছেন অর্পিতা ঘোষ। পেয়েছেন সাংগঠনিক দায়িত্ব। তবে কি বিজেপি-র সংশ্রব ছেড়ে বাবুল এ বার অর্পিতার ছেড়ে আসা রাজ্যসভার আসনে বসবেন?
বাবুল যে দিন বিজেপি ছাড়ার ঘোষণা করেছিলেন, সে দিনই অন্য দলে তিনি যাবেন কি না, তা নিয়ে নানা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। সেটাও ছিল একটা শনিবার। বিকেলের দিকে তিনি ফেসবুকে দীর্ঘ পোস্ট করে লিখেছিলেন, ‘অন্য কোনও দলে যাচ্ছি না। তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিএম, কোথাও নয়। একেবারে নিশ্চিত ভাবে বলছি। কেউ আমায় ডাকেনি, আমিও কোথাও যাচ্ছি না। আমি বরাবর একপক্ষের সমর্থক। চিরকাল মোহনবাগানকেই সমর্থন করে এসেছি। বাংলায় একমাত্র বিজেপিই করেছি।’ কিন্তু ৩১ জুলাইয়ের সন্ধ্যা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই নিজের পোস্ট পাল্টে ফেলেন বাবুল। অন্য দলে যাওয়ার প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে ‘সবার সব কথা শুনলাম— বাবা, (মা) স্ত্রী, কন্যা, দু’-একজন প্রিয় বন্ধুবান্ধব... সবটুকু শুনে বুঝেই অনুভব করেই বলি, চললাম...’ অংশটুকুই রেখে দেন। এর পরে বয়ান বদল নিয়ে নিজের বক্তব্য জানানোর পাশাপাশি বাবুল এটাও লিখেছিলেন, ‘সমাজসেবা করতে গেলে রাজনীতিতে না থেকেও করা যায়। নিজেকে একটু গুছিয়ে নিই আগে তারপর।’
কিন্তু সেই ঘোষণার ঠিক ৫০ দিনের মাথায় দলবদলের পরে তৃণমূল শিবিরে ইতিমধ্যেই জল্পনা চলছে, বাবুল খুব তাড়াতাড়ি বিজেপি-র সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারেন। তৃণমূল তাঁকে হয়তো রাজ্যসভায় পাঠাবে। গত বৃহস্পতিবারই রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছেড়েছেন অর্পিতা। ২০২০ সালে সাংসদ হওয়া অর্পিতার সাংসদ পদের মেয়াদ রয়েছে ২০২৬ পর্যন্ত। অর্পিতার ইস্তফার পরে এক দিন যেতে না যেতেই বাবুলের আগমনে তাই নতুন প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, তৃণমূল সূত্রেই জানা গিয়েছিল, অর্পিতার জায়গায় কোনও চমক দেওয়ার ভাবনা রয়েছে দলের।