BJP

বিজেপির মহিলা নেত্রীদের অনেকেরই কপাল খুলবে লোকসভা ভোটে, মোদীর মান রাখার নির্দেশ নেতৃত্বের

লোকসভা নির্বাচনের দামামা বেজে না গেলেও প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সব দলই। বিজেপি এ বার দেশে এক তৃতীয়াংশ মহিলা প্রার্থী দিতে চায়। সেই মর্মে এই রাজ্যেও নির্দেশ এসেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:৩৪
BJP is planning to increase women candidate in Lok Sabha election 2024.

মহিলা প্রার্থী দিতে তারকার খোঁজে বিজেপি। — ফাইল চিত্র।

অনেক দিন আগেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন আগামী লোকসভা নির্বাচনে দল রাজ্যে অর্ধেক আসনে মহিলা প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়ার কথা ভাবছে। অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের যা নির্দেশ, তাতে রাজ্য বিজেপিকেও ৪২ আসনের মধ্যে কম পক্ষে ১২ জন মহিলা প্রার্থী দিতে হবে। প্রকাশ্যে না বলা হলেও বিজেপির অন্দরে ইতিমধ্যেই এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তাতে মনে করা হচ্ছে, এমনিতে লোকসভায় প্রার্থী হিসাবে অতীতে ভাবা হয়নি রাজ্য বিজেপির এমন অনেক নেত্রীই এ বার দলের টিকিট পেয়ে যেতে পারেন। খামতি পূরণের জন্য চলচ্চিত্র জগতের কাউকে প্রার্থী করা যায় কি না, সে চিন্তাও শুরু হয়েছে বিজেপির মধ্যে। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘আমাদের দলে প্রার্থী বাছাই করেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ভোট অনেক দূরে। তবে মহিলাদের সম্মান এবং সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে অন্য কোনও দলের সঙ্গে তুলনা চলে না বিজেপির।’’

Advertisement

ইতিমধ্যেই সংসদে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের বিল পাশ হয়ে গিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী তা কার্যকর হবে ২০২৯ সালে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে বারবার নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলেন, তার ছাপ ২০২৪ সালের নির্বাচনেই রাখতে চায় বিজেপি। প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচনে ২০১৯ সালে এই রাজ্যে বিজেপি পাঁচ জন মহিলা প্রার্থী দিয়েছিল। জিতেছিলেন হুগলিতে লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং রায়গঞ্জে দেবশ্রী চৌধুরী। মন্ত্রীও করা হয়েছিল দেবশ্রীকে। পরে অবশ্য তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ভোটে হেরে গিয়েছিলেন মালদহ দক্ষিণে শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী, ঘাটালে ভারতী ঘোষ এবং জঙ্গিপুরে মাফুজা খাতুন।

বিজেপি সূত্রে যা খবর, তাতে এই ছ’জনই এ বারেও টিকিট পাচ্ছেন। এর পরেও ছ’জনকে প্রার্থী করতে হবে। বাংলায় ৩৩ শতাংশ আসন মানে ১৪। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ কমপক্ষে এক ডজন আসনে প্রার্থী দিতেই হবে। ফলে অতীতে বড় নির্বাচনে না লড়া অনেক নেত্রীই এ বার সুযোগ পেতে পারেন। এঁদের মধ্যে অবশ্যই রয়েছেন আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক তথা রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল। তিনি অবশ্য বাবুল সুপ্রিয় পদত্যাগ করার পরে আসানসোল লোকসভার উপনির্বাচনে পরাজিত হয়েছিলেন। এ ছাড়াও নন্দীগ্রামে হেরে যাওয়ার পরে ভবানীপুর উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী হলে তাঁর বিরুদ্ধে লড়েছিলেন বিজেপির আইনজীবী নেত্রী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। গত বিধানসভায় নির্বাচনে সোনারপুর দক্ষিণ আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন অভিনেত্রী অঞ্জনা বসু, বালিগঞ্জ উপনির্বাচনে বিজেপির টিকিট পান কেয়া ঘোষ। এঁদের অনেকের নামই প্রার্থী তালিকায় দেখা যেতে পারে। রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি চিকিৎসক মধুছন্দা কর, গত বিধানসভায় দমদম উত্তরের বিজেপি প্রার্থী চিকিৎসক অর্চনা মজুমদারের নামও উঠে আসতে পারে। তবে এ সবই প্রাথমিক আলোচনা। সবটাই ঠিক করবে বিজেপির সংসদীয় কমিটি।

গোটা দেশেই এ বার বিজেপি মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা বাড়াবে বলেই জানা গিয়েছে। তবে বাংলায় বিষয়টা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, লোকসভায় মহিলা সংরক্ষণ বিল (পোশাকি নাম ‘নারী শক্তি বন্দন অধিনিয়ম’) নিয়ে আলোচনায় তৃণমূলের পক্ষে বিজেপির সঙ্গে তুলনা টেনে আনা হয়। প্রাক্তন সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেছিলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলা সংরক্ষণ বিলের মা।’’ আর এক সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার সেই আলোচনাতেই বলেছিলেন, ‘‘লোকসভায় তৃণমূলের মহিলা সাংসদের সংখ্যা ৯। অর্থাৎ আমাদের ৪০ শতাংশ সাংসদ মহিলা। বিজেপির মহিলা সাংসদের সংখ্যা মাত্র ১৩ শতাংশ।’’ দেশের কোথাও বিজেপির মহিলা মুখ্যমন্ত্রী নেই জানিয়ে কাকলি বলেছিলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে সদ্যসমাপ্ত ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের জয়ীদের মধ্যে ৫৩.৬৬ শতাংশ, পঞ্চায়েত সমিতিতে ৪২.৯৭ শতাংশ এবং গ্রাম পঞ্চায়েত বিজয়ীদের ৩৫.৬৬ শতাংশ মহিলা’’। সেই সময়েই অর্থাৎ গত সেপ্টেম্বরে অভিষেক বলেন, “আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের তরফে ৫০ শতাংশ মহিলা প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে৷”

আরও পড়ুন
Advertisement