(বাঁ দিক থেকে) শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, নরেন্দ্র মোদী। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
মাঝে আর একটা রবিবার। তার পরেই ২৪ ডিসেম্বর কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’ কর্মসূচি। উপস্থিত থাকার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। কিন্তু সেই মঞ্চে জায়গা পাবেন না রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপির সব সাংসদ, বিধায়ক, নেতাকে ওই অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে বলা হলেও সকলকে মঞ্চের সামনে ‘ভক্ত’ রূপেই বসতে হবে। করতে হবে গীতাপাঠ। এমন মানসিক প্রস্তুতি রাখার কথা ইতিমধ্যেই সকলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে।
সাধারণ ভাবে বিজেপিতে এটাই দস্তুর যে, সরকারি অনুষ্ঠান না হলে প্রধানমন্ত্রীর পাশে অবশ্যই থাকার সুযোগ পান কোনও রাজ্যের সভাপতি, মুখ্যমন্ত্রী বা বিরোধী দলনেতা। কিন্তু ব্রিগেডের সমাবেশের ক্ষেত্রে তা হবে না। কারণ, আড়াল থেকে বিজেপি-সহ গোটা গেরুয়া শিবির এই কর্মসূচির উদ্যোক্তা হলেও অনুষ্ঠানটি হচ্ছে বিভিন্ন মঠ-মিশনের সমবেত উদ্যোগে ‘অখিল ভারতীয় সংস্কৃত পরিষদ’-এর নামে। পরিষদ ঠিক করেছে, এই কর্মসূচি যে হেতু সম্পূর্ণ ‘অরাজনৈতিক’ এবং ‘ধার্মিক’ তাই কোনও রাজনীতিকই মঞ্চে জায়গা পাবেন না। দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে থাকবেন মোদী।
মোদী ছাড়াও মঞ্চে থাকবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। যদি আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন, তবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মঞ্চেই বসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে বক্তব্য রাখতে পারবেন না। মূল কর্মসূচি সমবেত কণ্ঠে গীতাপাঠ। তবে অল্প সময়ের জন্য বক্তব্য রাখতে পারেন মোদী। আর বলবেন ওই দিনের অনুষ্ঠানের সভাপতি গুজরাতের দ্বারকামঠের বর্তমান শঙ্করাচার্য স্বামী সদানন্দ সরস্বতী। ব্রিগেডের কর্মসূচির প্রধান সংগঠক মানস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওই দিন ব্রিগেডে মূল অনুষ্ঠান গীতাপাঠ। ১৮ অধ্যায়ের গীতার মধ্যে থেকে বাছাই পাঁচটি অধ্যায় পাঠ করা হবে। সকলকে গীতা নিয়ে আসতে হবে। আমারও গীতা দেব। প্রধানমন্ত্রী এই উদ্যোগ নিয়ে কিছু বলতে পারেন। তবে মূল আশীর্বাণী দেবেন দ্বারকা মঠের শঙ্করাচার্য। আর কোনও বক্তৃতার কর্মসূচি থাকছে না।’’
মঞ্চে নেতারা উপস্থিত না থাকলেও বিজেপি ইতিমধ্যেই জোরকদমে ওই অনুষ্ঠান সফল করার উদ্যোগী হয়েছে। নেতারা নিজেদের মতো করে প্রচার চালাচ্ছেন। সাংসদ, বিধায়করা নিজেরা তো হাজির থাকবেনই সেই সঙ্গে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে আসবেন। একই ভাবে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ-সহ সঙ্ঘ পরিবারের সব সংগঠনই ব্রিগেডের অনুষ্ঠান সফল করার উদ্যোগী হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত বলেন, ‘‘ওই দিনের যে অনুষ্ঠান, তা তো আমাদের নয়। তবে আমরা সনাতন ধর্মের প্রতিনিধি হিসাবে অংশগ্রহণ করব। মঞ্চ তো নয়ই, আয়োজকরা আমাদের যেখানে বসতে বলবেন, সেখানে বসে গীতাপাঠ করব।’’